আগামী ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দশম সমাবর্তন। তবে অন্য স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তুলনায় রাবিতে নিবন্ধন ফি বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা। আর এই বর্ধিত ফি'র কারণে অনেক শিক্ষার্থী সমাবর্তনে অংশগ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমাবর্তন শেষ হলে গাউন ফেরত নিয়ে নেয় কিন্তু আমরা সেটা নেই না। আর আগের সমাবর্তনেও একই ফি ধার্য করা হয়েছিলো। তাই নিবন্ধন ফি কমানোর কোনো সুযোগ নেই।
গত ৩০ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৩ নভেম্বর থেকে সমাবর্তনের নিবন্ধন শুরু হবে। চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে পিএইচডি, এমফিল, স্নাতকোত্তর এবং এমবিবিএস, বিডিএস ও ডিভিএম ডিগ্রি অর্জনকারীরা এ সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। প্রত্যেকটি ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণকারীদের তিন হাজার ৫৭০ টাকা ফি দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক মশিহুর রহমান।
সমাবর্তনে অংশগ্রহণে আগ্রহী সমাজ কর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী জামিল উদ্দিন বলেন, সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের খোঁজ নিলে দেখা যাবে অর্ধেক শিক্ষার্থী এখনো বেকার। তারা টিউশনি অথবা পার্ট টাইম চাকরি করে জীবনযাপন করছে। এখন এই অবস্থায় তাদের পক্ষে তিন হাজার ৫৭০ টাকা ফি দিয়ে নিবন্ধন করা কঠিন ব্যাপার। আর অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দুই হাজার টাকায় সমাবর্তন করতে পারলে আমাদের এতো লাগবে কেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুমাত্র স্নাতকোত্তর ক্যাটাগরিতে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। আর এই একটি ক্যাটাগরিতে তিন হাজার ৫৭০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম সমাবর্তন ২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর দুই ক্যাটাগরিতে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেক ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন ফি ছিল দুই হাজার টাকা।
এদিকে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। এতে স্নাতক ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণকারীদের জন্য এক হাজার ৫০০ টাকা, স্নাতকোত্তর ক্যাটাগরিতে এক হাজার ৫০০ টাকা, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর যৌথ ক্যাটাগরিতে দুই হাজার ৫০০ টাকা নিবন্ধন ফি নির্ধারণ করা হয়। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি। এতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় ক্যাটাগরিতে দুই হাজার টাকা নিবন্ধন ফি নির্ধারিত ছিল।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা মো. মিজানুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘অধিকাংশ শিক্ষার্থী সমাবর্তন শেষে স্মৃতি হিসেবে গাউন নিয়ে যেতে চান। এজন্য আমরা শিক্ষার্থীদের সমাবর্তন শেষে গাউন ও টুপি দিয়ে দেই। আর এগুলো বানাতে এক হাজার পাঁচশ টাকা খরচ পড়ে যায়। তাই অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে হিসেব করলে আমরা কিন্তু নিবন্ধনের জন্য দুই হাজারের বেশি টাকা নিচ্ছি না। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একই গাউন প্রত্যেক বছর ব্যবহার করায় তাদের দুই হাজার টাকা ফি নিলেই চলে যায়।
বিডি প্রতিদিন/০৮ নভেম্বর ২০১৬/হিমেল-১৯