ঢাকা জেলার সাভারের আমিন বাজার বড়দেশী এলাকার জমি দখলকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতা ও রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন ৩০ জন।
রবিবার দুপুরে আমিনবাজার এলাকার বড়দেশী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধরা হলেন সিলিকন রিয়েল এস্টেটের কর্মী হাবুল (৪২), মিন্টু (৩০), জুয়েল (২৩), নয়ন (৩০) ও জীবন (২৬)।
স্থানীয়রা ও পুলিশ জানায়, দশ বছর আগে সাভারের আমিনবাজার এলাকার বড়দেশী গ্রামে প্রায় ১৭শ' একর জমি নিয়ে সিলিকন রিয়েল এস্টেটের প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়। এরপর থেকেই ওই জমিতে বালু ফেলে প্লট তৈরি ও বিক্রি করা শুরু করে কর্তৃপক্ষ। তবে বেশ কয়েকমাস যাবৎ আমিনবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার যুবলীগ নেতা তুহিন খান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজান, আদাবর এলাকার ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ ও সাইফুলসহ বেশ কয়েকজন লোক ওয়েস্ট লেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালু করে। তারা গত কয়েকমাস যাবৎ তাদের জমিতে মালিকানা দাবি করে আসছে। এরই সূত্র ধরে রবিবার দুপুরে আমিনবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, যুবলীগ নেতা তুহিন ও ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ, সাবেক কাউন্সিলর মিজান প্রায় ২০টি ট্রলার দিয়ে দুই শতাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসীরা তাদেরকে লক্ষ করে একশত রাউন্ড গুলি ৫০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তাদের হামলায় সিলিকন সিটির ৫ গুলিবিদ্ধসহ আহত হয় ৩০ জন। তাদেরকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এ ব্যাপারে সিলিকন সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সানোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, যুবলীগ নেতা তুহিন, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজা ও ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ তাদের কাছে চাদা দাবি করে আসছিল। গত ছয় মাস আগে তাদেরকে ৭০ লাখ টাকা চাদাঁও দেয়া হয়েছে। এদিকে তারা আবারও কয়েকদিন যাবৎ চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তারা দুই শতাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তার কোম্পানির শ্রমিকদের উপর হামলা চালায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়াও সন্ত্রাসীরা জুয়েল নামের তার এক কর্মীকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যার পর লাশ বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দিয়েছে বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে আমিনবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমি কিছু জানি না। তবে আমার এলাকার ঘটনার পর থেকে আমি জেনেছি।
এব্যাপারে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন খবর পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন গুলি খোসা, বোমা ও বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন আলমত উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ নভেম্বর, ২০১৬/মাহবুব