বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) ‘গ’ অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবিরকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে যুবলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
রবিবার দুপুর ২টার দিকে সিটি করপোরেশনের অফিস কক্ষে হুমায়ুন কবিরকে লাঞ্চিত করার সময় যুবলীগ ক্যাডাররা তার মুঠোফোনটিও নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলতাল মাহমুদ সিকদার সমঝোতা করে তার মুঠোফোনটি ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন বলে জানিয়েছেন প্রকৌশল বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা। তবে নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হওয়ার আশঙ্কায় বিষয়টি চেপে গেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, প্রায় ১ মাস আগে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব তহবিল দিয়ে নগরীর বিভন্ন সড়ক সংস্কার ও পুননির্মানের ৮০ গ্রুপ কাজের টেন্ডার আহ্বান করে। ওই নোটিশের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি কাজে দরপত্র জমা দিয়ে ওপেনিং লোয়েস্ট হন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিন সিকদার। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির কারসাজি করে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের উন্নয়ন কাজগুলো ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিল মোশারেফ আলী খান বাদশার জমা দেয়া মেসার্স নিয়াজ ট্রেডার্সের নামে লোয়েস্ট করেন। এ খবর পেয়ে যুবলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে গিয়ে নিয়াজ ট্রেডার্সের লোয়েস্ট হওয়ার ব্যাখ্যা চান। এ নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে তারা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশল বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী।
এ সময় যুবলীগ নেতাকর্মীরা নির্বাহী প্রকৌশলীর মুঠোফোনটিও নিয়ে যায়। ওই কক্ষে শোরগোলের শব্দ পেয়ে সেখানে ছুটে যান ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলতাফ মাহমুদ সিকদার। পরে তিনি যুবলীগ নেতাদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর মুঠোফোনটি এনে ফিরিয়ে দেন।
কাউন্সিলর আলতাফ মাহমুদ সিকদার বলেন, তিনি ব্যক্তিগত কাজে নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার পর হুমায়ুন কবির তাকে বলেন, স্যার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাজ নিয়ে একটু উচ্চবাচ্য হয়েছে। আপনারা (কাউন্সিলর) এগুলো সমাধান করে দেন। নির্বাহী প্রকৌশলীর শারীরিকভাবে নিগৃহীত হওয়া কিংবা তার মুঠোফোনটি ফেরত এনে দেয়ার কথা অস্বীকার করেন তিনি।
মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিন সিকদার নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবিরকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি (নির্বাহী প্রকৌশলী) টেন্ডারে কারসাজি করেছেন। এ নিয়ে তার কাছে কৈফিয়ত চাওয়ায় সেখানে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে মাত্র।
নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, ঠিকাদারদের সাথে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিলো। পরে ঠিক হয়ে গেছে। লাঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি চেপে গিয়ে তিনি বলেন, ও রকম হলে তিনি নিশ্চয়ই আইনী ব্যবস্থা নিতেন। আর মুঠোফোন নিয়ে গেলে কেউ ফেরত দেয় বলে উল্টো প্রশ্ন রাখেন তিনি।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবিরের সাথে সন্ধ্যায়ও একটি অনুষ্ঠানে তার দেখা হয়েছে। তখন পর্যন্ত সে (নির্বাহী প্রকৌশলী) তাকে কিছুই বলেনি।