১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ১৮:১০

প্রাথমিক শিক্ষার অনিয়ম শোধরাতে দুদকের আল্টিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:

প্রাথমিক শিক্ষার অনিয়ম শোধরাতে দুদকের আল্টিমেটাম

প্রাথমিক শিক্ষা খাতের নানা ত্রুটি ও অনিয়ম সংশোধনে তিন মাস সময় বেঁধে দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেছেন, এ সময়ের মধ্যেই সব নিরসন করে নিতে হবে। আমরা তিনমাস অপেক্ষা করবো। আশা করি জড়িতরা শুধরে নিবেন। এই তিনমাস এ সেক্টরে হাত দেব না।

দুদক চেয়ারম্যান অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষকদের পেনশনের কাগজপত্র প্রস্তুত করতে, শিক্ষকদের বদলি, নারী শিক্ষকদের মাতৃত্বকালীন ও অর্জিত ছুটি নিতে, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে প্রকৃত ফলাফল পরিবর্তন, কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে মেধা তালিকায় ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ বা ৫ম স্থানে উন্নীত করে ফলাফল কারচুপি করা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে মনোনয়নের জন্য আর্থিক লেনদেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শিক্ষক পাঠদান না করে বাইরে পড়ানো কিংবা ব্যক্তিগত কাজে লিপ্ত থাকা, এ ক্ষেত্রে ওই শিক্ষকের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে কর্তৃপক্ষের দেখেও না দেখার ভান করাসহ এ জাতীয় পাহাড়সম অভিযোগ প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের বিরুদ্ধে দুদকে জমা পড়েছে। এ এসব অভিযোগ শোধরাতে তিন মাসের সময় দেওয়া হল। এ সময়ের মধ্যেই সব নিরসন করে নিতে হবে।
    
বৃহস্পতিবার সকালে প্রাথমিক শিক্ষায় সুশাসন নিশ্চিতকরণে চট্টগ্রাম বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নগরীর প্রাইমারি টিচার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) অডিটোরিয়ামে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো আবু হেনা মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আসিফ উজ জামান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন। চট্টগ্রাম জেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হৃশীকেশ শীলের সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ পরিচালক  মো. মাহবুবুর রহমান বিল্লাহ। সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সুপারিটেনডেন্ট, পিটিআই ইন্সট্রাক্টর ও রিসোর্স সেন্টারের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় দুদক চেয়ারম্যান উপস্থিত শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা কি উত্থাপিত অভিযোগ মানেন? তখন শিক্ষা কর্মকর্তারা উত্তরে বলেন ‘না’। এরপর দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘তাহলে এ অভিযোগ দুদক অফিসে কীভাবে আসলো’? এ সময় উপস্থিত শিক্ষা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, যদি তাই হয়, তাহলে ৪ বছরের ক্লাস্টারে কোন পরিদর্শন হয়নি কেন। আপনাদের কারও কাছে কোন জবাব নাই। চাকরি নয়, শিক্ষার মিশন নিয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমি জানি শিক্ষকরা সবাই সৎ, নিষ্ঠাবান। জাতি প্রাথমিক শিক্ষার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। তাই প্রাথমিক শিক্ষাকে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত করতে না পারলে এদেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। অন্যের কাছে জবাবদিহি করার চেয়ে নিজের কাছে জবাবদিহি করা সম্মানের।

বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর