সাভার মডেল থানায় কর্মরত এক নারী পুলিশ কর্মকর্তা এস আই তাহমিনা বেগমের (৩৩) ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে সঙ্গে একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
শনিবার রাত ৯ টার দিকে সাভার মডেল থানার তিন তলা পুলিশ কোয়ার্টারের নিচ তলার ফ্ল্যাট থেকে তার লাশ উদ্ধার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। এই ঘটনার পর থানায় জনসাধারণের প্রবেশ কড়াকড়ি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ৬ মাসের মাতৃকালিন ছুটিতে ছিলো এই উপ-পরিদর্শক তাহমিনা বেগমে। শনিবার রাতে ওই ফ্ল্যাটের একটি রুমে তাহমিনা বেগমের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় তার স্বামী মোবারক হোসেন। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। ওই দম্পতির তানভীর হোসেন (৫) ও মাহেরা নামের (৫ মাস) দুই সন্তান রয়েছে। তাহমিনা বেগম ২০০২ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে ময়ময়সিংহ জেলা থেকে সে সাভার থানায় ছয় বছর ধরে কর্মরত ছিল। নিহতের স্বামী মোবারক বেসরকারী ডেভলপার কোম্পানি ডমিনোতো চাকুরী করেন বলে জানা গেছে।
তাহমিনার স্বামী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, "আমাদের সাথে কোন ঝগড়াঝাটি ছিল না, খুবই সুসর্ম্পক ছিল। কি কারনে তিনি আত্মহত্যা করেছে আমি জানি না। আমি বাচ্চাদের পাশের রুমে নিয়ে খাবার খাওয়াচ্ছিলাম। পরে তাকে ডেকে কোন সারা না পেয়ে সন্দেহ হয়। তখন দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে দেখি ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায়। তখন পুলিশকে খবর দেই।"
এদিকে এস আই তাহমিনা বেগমে ছেলে তানভির হোসেন তাহা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, "আমার বাবার সাথে মাঝে মাঝে ঝগড়া লাগতো মা খুব রেগে আমাকে মারধর করতো, বাবার সাথে খুব রাগ করতো।" মৃতের বাবা আব্দুস সালাম অভিযোগ করে জানান, "স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে আমার মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।"
সাভার মডেল থানার (ওসি) তদন্ত সাওগাতুল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, "সে নিজ রুমে ফ্যানের সাথে ওড়না নিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে দন্ড বিধির ৩০৬/৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করার হয়েছে। নিহত তাহমিনা আক্তার ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলেন। আগামী ডিসেম্বরের ৮ তারিখে তার কর্মস্থল সাভার মডেল থানায় কাজে যোগদানের কথা ছিল।"
এই ঘটনার পর ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান সাফিউর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, "এই ঘটনার জন্য ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইদুর রহমানকে তদন্তে জন্য পাঠানো হয়েছে। কারণ এই আত্মহত্যা তদন্তে নিয়েছে নতুন মোড়। হাতে লেখা চিরকুটের সূত্র ধরে নড়েচড়ে বসেছেন তদন্তকারীরা। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের রহস্যজট খুলতে এখন তৎপর ঢাকা জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের ধারণা, পরিবারের সদস্যদের টার্গেট করেছে। রবিবার সকালে তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।"
বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর