বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের মুন্সিরতালুক এলাকায় কলেজছাত্রকে গলা কেটে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনার হোতা প্রতিবেশী মো. আরিফুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তার কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দা, রক্তমাখা গেঞ্জি ও ট্রাউজার এবং হত্যার শিকার কলেজছাত্র মো. ইমরানের ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বরিশাল জেলা পুলিশ লাইনসে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার বলেন, আরিফুল হক পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কলেজ ছাত্র ইমরানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। হত্যাকান্ডের কারণ হিসেবে পুলিশ সুপার বলেন, ইমরান দীর্ঘদিন প্রতিবেশী আরিফুলের স্ত্রীকে উত্যক্ত করে আসছিল। ইমরান আরিফুলের স্ত্রীর ছবির সঙ্গে নিজের ছবি দিয়ে অশ্লীল ছবি বানিয়ে তার স্ত্রীকে হয়রানি করছিল এবং তার স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে অনেকবার ইমরানকে সতর্ক করে আরিফুল। আরিফুলের মুঠোফোন থেকে তার স্ত্রীর ছবি মুছে ফেলার জন্যও একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও কোন কথাই কর্নপাত করেনি ইমরান।
ঘটনার দিন গত ৮ ফেব্রুয়ারী রাত ১০টার দিকে ইমরানকে আরিফুলের ঘরের পেছনে তার স্ত্রীর সাথে কথা বলতে দেখেন। এ সময় আরিফুল ইমরানের মুঠোফোন তল্লাশি করে তার স্ত্রী আর ইমরানের অশ্লীল ছবি দেখতে পায়। আরিফুল মুঠোফোন থেকে ওই ছবি মুছে ফেলার জন্য ইমরানকে অনুরোধ করে এবং একান্তে কথা বলার জন্য বাড়ির পুকুরের পাশে অনাবাদি জমিতে নিয়ে যায়। এসময় ইমরান অশ্লীল ছবি মুছেে ফেলতে গরিমসি করলে আরিফুল তার সাথে থাকা দা দিয়ে ইমরানের ঘাড়ে এবং গলায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। ইমরানের মৃত্যু নিশ্চিত হলে আরিফুল বাড়ি ফিরে যায়। পরে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা দা এবং পড়নের গেঞ্জি ও ট্রাউজার ধুয়ে লুকিয়ে রাখে সে। একই সঙ্গে হত্যার শিকার কলেজ শিক্ষার্থী ইমরানের মুঠোফোন মশাং বাজার এলাকার সেতুর নিচে ফেলে দেয় সে।
পরদিন সকালে ইমরানের বাড়ির পাশে অনাবাদি কৃষি জমি থেকে তার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মো. ছরোয়ার হোসেন হাওলাদার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে উজিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ একই বাড়ির মো. আরিফুল ইসলামকে সন্দেহজনকভাবে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার আরিফুলকে আদালতে পাঠিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া আরিফুল ইসলাম একই বাড়ির মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে। নিহত ইমরান ওই উপজেলার হাজী তাহেরউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের বিএ (পাস) পরীক্ষার্থী ছিলো।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার