বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর অব. এম এ মান্নান বলেছেন, ঋণ খেলাপীরা দেশের অর্থনীতির জন্য বড়প্রতিবন্ধকতা। যে কোন মূল্যে এটা বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেছেন, বর্তমানে ব্যাংকের সুদ আদায় করা হয় চক্রবৃদ্ধি হারে। প্রথম কোয়ার্টারের টাকা না দিলে পরের কোয়ার্টার কম্পাউন্ড (যৌগিক) হয়ে যায়। এভাবে আসল একই থাকে কিন্তু সুদ বাড়তে থাকে। একসময় বিশাল অংশ দাঁড়ায়। এই চক্রবৃদ্ধি সুদ ব্যবসায়ী, সমাজকে, দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। খেলাপী ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। তাই প্রত্যেকটি ব্যাংকে সরল সুদে ঋণ দেওয়ার প্রস্তাাব করছি। তাতে দেশ ও জাতির উন্নীত হবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সংসদ ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারন আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
এরপর জাতীয় পার্টির এমপি মুজিবুল হক চুন্নু বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যাংক খাতের খেলাপি নিয়ে উত্তপ্ত বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ প্রতিদিনই বাড়ছে। অন্যদিকে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদের কারণে অনেক ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে পড়ছেন। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি ব্যাংকিং কমিশনরে গঠনের সুপারিশ করেন তিনি।
এদিকে মেজর মান্নান বলেন, প্রস্তাাবিত বাজেট হতে হবে জনগণের প্রতি সরকারে প্রতিশ্রুতি ও নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিফলন। আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত সর্বোস্তরের মানুষের আয় বৃদ্ধি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, দারিদ্র নিরসন, জীবন মানের গুণগত পরিবর্তন তবেই হবে সত্যিকারে গণমুখী বাজেট।
তিনি বলেন, অর্থনীতির উর্ধ্বগতি বজায় রাখতে হলে রপ্তানি বাড়াতে হবে। আমদানি নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। অথচ আমাদের অর্থনীতি আমদানি নির্ভর। এখানে ৫৮ শতাংশ আমদানির বিপরীতে মাত্র ৪২ শতাংশ আসে রপ্তানি থেকে। যতদিন পর্যন্ত আমাদের রপ্তানি খাত আমদানির থেকে বেশি না হবে ততদিনই দেশের অর্থনীতি পরিপূর্ণ গতিশীলতা আসবে না। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হলে আমাদের রপ্তানিখাতগুলো উৎসাতি করতে হবে এবং রপ্তানীর চ্যালেঞ্জগুলো অনুধাবন করে সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে তিনি বলেন, একজন মালিকের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান থাকে তার একটি প্রতিষ্ঠান খারাপ করলে দেশের আইনে সে আর কোন ব্যাংকে ব্যবসা করতে পারছে না। অন্যসব ব্যাংকের হিসাব নিয়মিত থাকলেও অন্য একটি হিসাব অনিয়মিত হওয়ায় সে আর ব্যবসা করতে পারছে না। এই ব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট প্রমান করে যোগ্য নেতেৃত্বে দেশ কতটুক এগিয়েছে। আপাতত দৃষ্টিতে উচ্চাভিলাসী বাজেট মনে হলেও এই বাজেটের লক্ষ্য অর্জন করা গেলে তা হরে সরকার এবং রাষ্ট্রের জন্য একটি বিশাল অর্জন। তবে এই বাজেটকে সম্পূর্ণ গণবান্ধব করতে হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংশোধন করতে হবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন