অপ্রয়োজনীয় সিজার রোধে আগামী ৬ মাসের মধ্যে একটি নীতিমালা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। নীতিমালা করার পর তা হাই কোর্টে দাখিল করতেও আদেশে বলা হয়েছে।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। এর আগে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) রিট আবেদনটি দাখিল করে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতি দেওয়া এই আদেশে আদালত আগামী ১ মাসের মধ্যে বিশেষজ্ঞ ও সমাজের স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে নীতিমালাটি করার নির্দেশ দেয়। অন্তবর্তীকালীন আদেশের পাশাপাশি রুলও জারি করেছে হাই কোর্ট। রুলে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অপ্রয়োজনীয় সিজার প্রতিরোধে কার্যকর তদারকি করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামি চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতিকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। আদেশের পর তিনি জানান, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের পক্ষ থেকে রিটটি করা হয়। সেই রিটের শুনানিতে আমি ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন ও সেভ দ্য চিলড্রেনের তথ্য ও মতামত তুলে ধরে বলি, শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগের বেশি সি-সেকশন (সিজার) কোনো দেশেই প্রয়োজনীয় হতে পারে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে এটা প্রায় ৩১ শতাংশ। যেখানে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ৮৩ শতাংশ এবং সরকারি হাসপাতালে সিজারের হার ৩৫ শতাংশ। আর এনজিও হাসপাতালগুলোতে সিজারের হার
৩৯ ভাগ। দেশে সিজারের এই যে একটা এলার্মিং বিষয় সেটাকে থামানোর জন্যই রিটে আদেশ চাওয়া হয়। শুনানির পর আদালত রুলসহ আদেশ দেন। আদালত তার আদেশে যে নীতিমালার করা নির্দেশ দিয়েছেন সেই নীতিমালাটির মূল বিষয় হবে অপ্রয়োজনীয় সিজারের হার কমানো।
এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনযুক্ত করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের পক্ষে তাদের আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম এ রিট করেন। গত ২১ জুন বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়,
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ বলছে বাংলাদেশে গত দুই বছরে শিশু জন্মের ক্ষেত্রে সিজারিয়ানের হার বেড়েছে ৫১ শতাংশ। বিষয়টিকে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার উল্লেখ করে সংস্থাটি বলছে, এতে বাবা-মায়েদের সন্তান জন্মদানে ব্যাপক পরিমাণে খরচের ভার বহন করতে হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন