বেতনভাতা বৃদ্ধি, নিয়োগপত্র প্রদান, প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু, কর্মস্থলে নৌ শ্রমিকদের নিরাপত্তা প্রদান এবং নিরাপদ নৌপথসহ ১১ দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির ফলে অচল দক্ষিণাঞ্চলের নৌযোগাযোগ। গত মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে নৌশ্রমিকদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মবিরতি শুরু হলেও জনদুর্ভোগের শুরু বুধবার সকাল থেকে।
বরিশালের স্থানীয় ও অভ্যন্তরীণ এবং দূরপাল্লা রুটের সকল ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় নদী বন্দর থেকে কোন রুটে কোন নৌযান ছেড়ে যায়নি। একইভাবে দক্ষিণাঞ্চলের কোন রুট থেকে বরিশাল নদী বন্দরে আসেনি কোন যাত্রীবাহি নৌযান। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী। তারা গন্তব্যে যেতে না পেরে ফিরে গেছে। অনেকে আবার বিকল্প ব্যবস্থায় অধিক সময় ও অর্থ খরচ করে ঝূঁকি নিয়ে গন্তব্যে গেছেন।
কর্মবিরতি সফল করতে বুধবার বেলা ১২টার দিকে বরিশাল নদী বন্দরে নোঙ্গর করা দূরপাল্লা রুটের সকল নৌযান পন্টুন থেকে সরিয়ে নদীর অপরপ্রান্তে গিয়ে নোঙ্গর করে রাখেন নৌযান শ্রমিকরা।
শুধু যাত্রীবাহি নয়, জ্বালানি এবং পন্যবাহী জাহাজ চলাচলও বন্ধ রয়েছে। বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর চাঁদমারী এলাকায় নদীতে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে অর্ধ শতাধিক পন্য ও জ্বালানিবাহী নৌযান।
এ কারনে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি জ্বলানী ও পন্য পরিবহনেও সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থার। এতে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ব্যবসা বানিজ্যে।
ভূক্তভোগীরা জনদুর্ভোগ লাগবে ধর্মঘটি শ্রমিকদের দাবীর বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য সরকার এবং নৌযান মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
লঞ্চ লেবার এসোসিয়েশন বরিশাল অঞ্চলের সভাপতি শেখ আবুল হাসেম বলেন, আর কোন আশ্বাস নয়, এবার দাবী আদায় করেই কাজে ফিরতে চান তারা। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশে সকল প্রকার নৌযানে শ্রমিকরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবে বলে ঘোষনা দেন তারা।
অপরদিকে লঞ্চ মালিক সমিতি কেন্দ্রিয় কমিটির সহসভাপতি মো. সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, সরকারী গেজেট অনুযায়ী তারা শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিচ্ছেন। শ্রমিকরা নিত্য নতুন দাবী তুলছে। শ্রমিকদের এত দাবী মানা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি নৌ যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখার জন্য শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল সরকারের মধ্যস্থতায় মালিক ও শ্রমিকদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে শ্রমিকদের দাবী বাস্তবায়নের জন্য ৪৫ দিনের সময় নিয়েছিলেন নৌযান মালিকরা। কিন্তু ওই সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও দাবী আদায় না হওয়ায় ফের অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতি শুরু করেন তারা।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার