বেলা সাড়ে তিনটা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন গোলচত্বরের পাশে একাকী দাঁড়িয়ে কাঁদছিল ৮ বছরের এক শিশু। দুচোখে অশ্রু নিয়ে হতাশ দৃষ্টিতে কাকে যেন খুঁজছিল সে। এটা দেখে শিশুটির কাছে এগিয়ে গেলেন এক পথচারী।
তিনি জানতে পারলেন ভীড়ের মাঝে শিশুটি হারিয়ে গেছে। নাম জিজ্ঞাসা করলে সে নিজের নাম ইয়ামিন বলে জানায়। ইয়ামিন তার বাবা-মাকে খুঁজছে। কিন্তু সে তার বাসার ঠিকানা বলতে পারছে না। স্থানীয় থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান সহৃদয় ওই পথচারী।
বিষয়টি জানতে পারেন ডিএমপির বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নুরে আযম মিয়া। তিনি ও তার সহকর্মীরা ভাবতে থাকেন কীভাবে ইয়ামিনকে তার বাবা-মায়ের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। তার বাসা কোথায় জানতে চাইলে ইয়ামিন শুধু মিরপুর এলাকার কথা বলে কিন্তু বিস্তারিত ঠিকানা বলতে পারে না।
বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নুরে আযম মিয়া বলেন, আমি বিষয়টি অবগত হয়ে ইয়ামিনের সাথে কথাবার্তা বলি। কিন্তু তার বাবা-মায়ের ঠিকানা জানা না থাকায় তাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া খানিকটা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে ইয়ামিন জানায় মিরপুর এলাকায় তাকে নিয়ে গেলে সে বাসা চিনতে পারবে।
অফিসার ইনচার্জের নির্দেশনায় বিমানবন্দর থানার টহলের দায়িত্বে থাকা উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. ওবায়দুল্লাহ ইয়ামিনকে সাথে নিয়ে মিরপুর এলাকায় যান। পুলিশ কর্মকর্তা ইয়ামিনকে নিয়ে মিরপুর এলাকায় গিয়ে তার বাসা খুঁজতে থাকেন। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে টহলদল ইয়ামিনের বাবাকে খুঁজে পায়।
ইয়ামিনের পিতা মো. ইসমাইল সন্তাকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তার হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে নিরাপদে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশসহ ডিএমপির প্রতি সীমাহীন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ধন্যবাদ জানান।
বিমানবন্দর থানার টহল পার্টিকে বিদায় জানাতে গিয়ে তিনি বারবার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছিলেন।
তিনি বলেন, আজ আমার হারিয়ে যাওয়া বাচ্চাকে নিরাপদে বাসায় পৌঁছে দিয়ে পুলিশ যে মহৎ কাজ করেছে তার জন্য আমি বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। ধন্যবাদ ডিএমপি। সূত্র: ডিএমপি নিউজ
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন