ব্যস্ত কুমিল্লা নগরীতে এখন ভিড় নেই। রুদ্ধশ্বাসে ছুটছে মানুষ। গন্তব্য পৌঁছে কাজ সেরে আবার বাসায় ফিরছেন। রাস্তার পাশে যতটুকু ভিড় তা শুধু নিম্ন আয়ের মানুষের। জীবিকার টানে ঝুঁকি নিয়ে বেরিয়েছেন তারা। সাধারণ ছুটি ঘোষণার ও সেনা মোতায়েনের খবরের পর মঙ্গলবার থেকে এমনই চিত্র ফুটে ওঠে।
সকাল ১০টায় নগরীর অন্যতম প্রবেশদ্বার শাসনগাছা বাসস্ট্যান্ড গিয়ে দেখা যায়, বাস চালক ও হেল্পারদের হাকডাক আছে। তবে বাসস্ট্যান্ডমুখী যাত্রীদের চাপ নেই। সকাল সোয়া ১০ টায় রেইসকোর্স পুলিশ লাইন এলাকায় গিয়ে দু একটা খাবার দোকান খোলা থাকতে দেখা যায়।
বেলা ১১ টায় কান্দিরপাড় টাউন হলের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কাজের আশায় বসে আছেন জনত্রিশেক দিনমজুর। সবার সামনে ঝুড়ি আর কোদাল। কেতাদুরস্ত পোষাকের কাউকে দেখলেই এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন কাজের লোক লাগবে কিনা। নীলফামারীর আজাদ থাকেন ধর্মপুরে। জানালেন করোনা ভাইরাসের প্রভাবে গতকালও কেউ কাজে নেয়নি। আজ ১১ টা হয়ে গেলো। কেউ কাজে নেয়নি। আগের কিছু টাকা জমা আছে। এগুলো দিয়ে চলছি।
পাশে টাউন হলের মূল ফটক তালাবদ্ধ। পলিথিনে মোড়ানো চা-দোকানগুলো। লিবার্টি চত্বরের চা দোকানগুলোতে নেই আড্ডা। মনোহরপুরে দুই একজন ক্রেতাকে রসমলাই কিনতে দেখা গেছে। তবে লাইনে দাঁড়ানো ক্রেতা সমাগম চোখে পড়েনি। মনোহরপুরের সোনালী ব্যাংকের মূল ফটকে শতাধিক গ্রাহককে দেখা যায় অপেক্ষা করতে।
ঝাউতলা থেকে আসা গৃহিনী আয়েশা জানান, সঞ্চয়পত্রের লভ্যাংশ তুলে নিতে ব্যাংকে এসেছেন। আজ ব্যাংকের সামনে বেশীর ভাগ তার মতো। সবাই অপেক্ষা করছে লেনদেন শেষ করে বাসায় কখন ফিরবেন। অপেক্ষারত গ্রাহকদের চোখেমুখে একটা আতংকের ছাপ।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর জানান, টিসিবির মাধ্যমে পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা খেটে খাওয়া মানুষদের খাবারের ব্যবস্থা করবো।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল