ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় নির্মিত করোনা হাসপাতালের প্রশংসা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কলকাতার জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা। মাত্র ২১ দিনে দুই হাজার ১৩ বেডের হাসপাতাল প্রস্তুত করাকে চমক হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পত্রিকা।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন উহানে দশ দিনে করোনা আক্রান্তদের জন্য হাসপাতাল বানিয়ে চমকে দিয়েছিল। এরপর আরেক চমক তৈরি করলো বাংলাদেশের উদ্যোক্তাগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ ও দেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২১ দিনে তারা প্রস্তুত করে ফেলেছে ২ হাজার ১৩ বেডের অস্থায়ী হাসপাতাল। দেশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় রোগ মোকাবিলায় অস্থায়ী হাসপাতালটির জন্য আড়াই লাখ বর্গফুট জায়গা তারা সরকারকে অস্থায়ীভাবে ব্যবহার করতে দিয়েছে। একটি আন্তর্জাতিকমানের কনভেনশন সিটিজুড়ে থাকা পরিকাঠামোতেই স্থাপন করা হয়েছে শয্যা ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি। যার তত্ত্বাবধান করেছে দেশের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
আনন্দবাজার পত্রিকাকে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর জানান, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের চিকিৎসায় শুধু সরকারের উদ্যোগই নয়, দেশের প্রধান বেসরকারি শিল্প-উদ্যোক্তাদেরও সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে, সেই মানুষের প্রতি দায়বোধ থেকেই তারা এগিয়ে এসেছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত সরকার যতদিন ব্যবহারের প্রয়োজন মনে করবে ততদিন বসুন্ধরা গ্রুপের চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারসহ আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার ব্যবহার করা যাবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দ্রুত উদ্বোধনের পরই শুরু হবে চিকিৎসা কার্যক্রম। ইতোমধ্যে পরিচালক হিসেবে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম বারবার চালিয়ে দেখা চলছে এখন। দেখে নেওয়া হচ্ছে বিদ্যুতের সংযোগগুলোও। আইসিসিবির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন এসব তথ্য জানিয়েছেন। এর মাঝেই হাসপাতালের প্রায় সব ধরনের সরঞ্জাম প্রস্তুত। আইসিইউর কিছু কাজ বাদে সবই প্রস্তুত। এখন যেকোনো সময় রোগী এলে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সরকারকে আইসিসিবিতে ৫ হাজার শয্যার একটি অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছিলেন শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল প্রস্তাবিত এলাকা দেখে ও পর্যালোচনা করে এই অস্থায়ী হাসপাতালটির উদ্যোগ নেওয়ার পরে সেখানে এই হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু হয়।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলের ১২ তারিখে নির্মাণ শুরু করে তিন সপ্তাহেই উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছে এই অস্থায়ী হাসপাতালটি। করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে মোট আইসোলেশন বেড ২ হাজার ১৩টি। ছয়টি ক্লাস্টারে ১ হাজার ৪৮৮টি বেড বসেছে। এ ছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকছে আরো ৫২৫টি বেড। এর বাইরে ৪ নম্বর হলে ৭১ বেডের আইসিইউ থাকছে। এখানে থাকছে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থাও।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন