সিদ্ধিরগঞ্জে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের একটি কোরবানির পশুর হাট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। রেলের নিজস্ব জমিতে অবৈধভাবে এ পশুর হাট বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে ওই কোরবানি পশুর হাট বন্ধ করার জন্য বলা হয়েছে।
রেলওয়ের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশ দেয়া হয়।
জানা যায়, আসন্ন কোরবানির ঈদকে উপলক্ষ্য করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সাতটি হাটের ইজারা দেয়া হয়। এর মধ্যে বেশিরভাগ হাটই সিটি কর্পোরেশনের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায়। নাসিক ৪,৬,৮ ও ১০নং ওয়ার্ডে চারটি পশুর হাট ইজারা দেয় নাসিক। এর মধ্যে নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের এসও রোড এলাকার হাটটি রেলওয়ের জমিতে। এই হাটের ইজারাদার নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আতাউর রহমান।
ইজারাদার আতাউর রহমান হলেও এর সার্বিক ব্যবস্থাপনা করছেন সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডল। সম্প্রতি ওই হাটটি বন্ধের জন্য নির্দেশ দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই আদেশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে ওই চিঠিটির অনুলিপি রেলমন্ত্রীর অবগতির জন্য মন্ত্রীর একান্ত সচিব, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়, জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়, প্রধান ভূ-কর্মকর্তা (পূর্ব) বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম, বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক, বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফরের পাঠানো হয়।
চিঠিতে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ উল্লেখ করে, গত ১২ জুলাই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন সাতটি অস্থায়ী পশুর হাটের ইজারার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ইজারা বিজ্ঞপ্তিতে নাসিক ৬নং ওয়ার্ড এসও রোড বটতলা চৌরাস্তা বালুর মাঠ ভূমির মালিক বাংলাদেশ রেলওয়ে। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী রেলভূমিতে গরুর হাট বসাতে হলে অনুমতি নেয়ার বিধান আছে। এক্ষেত্রে রেলওয়ের কোনো অনুমতি গ্রহণ করা হয়নি।
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। করোনাভাইরাসের মধ্যে রেলভূমিতে পশুর হাট বসলে বহু লোকের জনসমাগম হবে। এতে করে করোনা ভাইরাস ব্যাপক হারে বাড়ার সম্ভাবনা আছে। পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরত্ব বজায় রেখে মানুষ জন চলাচল করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন ভূমিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী পশুর হাট বসার জন্য ইজারা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অনুমতি প্রদানের কোনো সুযোগ নেই। রেলভূমিতে পশুর হাট বন্ধ করার জন্য আপনার পক্ষ হতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো। পরে এই চিঠি উপরের দফতরগুলোতে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, নাসিক ৬নং ওয়ার্ডে গত কিছুদিন আগেও করোনার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত ছিল। যার ফলে করোনার এই সময়ে এই এলাকায় হাট ইজারা দেয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানায়, অত্যন্ত জনবহুল একটি ছোট জায়গায় এমন একটি পশুর হাট কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়। যা আমাদের সরকারের করোনা প্রতিরোধের সকল প্রচেষ্ট ব্যর্থ করবে। নতুন করে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকি শতভাগ বাড়বে। সিটি কর্পোরেশনের কোনো মতেই এই ছোট জায়গাটি এই সময় অস্থায়ী পশুর হাটের ইজারা দেয়া উচিত হয়নি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, হাট ইজারা দিয়েছে সিটি করপোরেশন। এটা তাদের এখতিয়ার। যদি আদালতে মামলা হয় বা আমাদের কোন দিক-নির্দেশনা দেয়া হয় তাহলে আমরা সেটি বন্ধ করে দেব।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত