দেশের প্রথম বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি ফাইন্যান্স আয়োজনে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অর্ধবার্ষিক ইনভেস্টরস মিট। এতে আইপিডিসি-র আর্থিক অবস্থার মূলচিত্র, বেঞ্চমার্ক এবং আগামী দিনগুলোর জন্য নির্ধারিত মূল কৌশলগত পরিকল্পনাসমূহ আলোচনা করা হয়।
আইপিডিসির অসাধারণ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে দৃঢ় ভিত্তি বজায় রাখার পাশাপাশি রেকর্ড পরিমাণ আয় উপার্জনের বিষয়টি অনলাইনে আয়োজিত এই সেশনে আলোচনায় উঠে আসে।
সেশনটিতে অনলাইনে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সংবাদকর্মী, দেশ-বিদেশের ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টগণ, স্টেকহোল্ডারগণ এবং সেশনটি আইপিডিসি-র অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ থেকে সরাসরি দেখেন অসংখ্য মানুষ।
আইপিডিসি-র চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার ফাহমিদা খানসহ সেশনটি সরাসরি সঞ্চালন করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মমিনুল ইসলাম। সেশনটিতে ২০২০ এর অর্ধবার্ষিক অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি কোভিড-১৯ পরবর্তী অবস্থার জন্য কোম্পানির নীতিগত অবস্থান সম্পর্কেও জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে মমিনুল ইসলাম ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরের কটেজ, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি ব্যবসা, নারী ও তরুণ উদ্যোক্তা এবং মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষজন যারা এই কঠিন সময়েও টেকসই প্রবৃদ্ধি ও মুনাফার গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তাদের প্রযুক্তি নির্ভর এবং সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ ব্যবসা পরিচালনায় বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
কর্পোরেট সুশাসন বজায় রাখা, সক্রিয়ভাবে কৌশল প্রণয়ন এবং গ্রাহক, কর্মী ও সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ আইপিডিসি-কে এ ধরনের সাফল্য অর্জনে সক্ষম করেছে। ২০২০ এর অর্ধবর্ষে এসে আইপিডিসি-র কাস্টমার ডিপোজিটের পরিমাণ ২০১৯ এর ডিসেম্বর থেকে প্রায় ৮.৭% বেড়েছে, ২০১৯ এর অর্ধ-বার্ষিক সময়কাল থেকে ২০২০ এর একই সময়কালে আয় বেড়েছে ২৪.৯%, এবং বর্তমানে খেলাপী ঋণের হার ১.৫৯% যা কিনা ইন্ডাস্ট্রিতে সর্বনিম্ন। আইপিডিসি ১৭.২৮% হারে সুদৃঢ় মূলধন পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করেছে।
অনিশ্চিত সংকটকে বিবেচনা করে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রভিশন রেখেও প্রতিষ্ঠানটির ট্যাক্স পরবর্তী নীট মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১.৬ কোটি টাকা যা বিগত বছরের অর্ধ-বার্ষিক সময়কাল থেকে ১% বেশি। কোম্পানিটি বর্তমান বছরের অর্ধ-বার্ষিক সময়কালে এসে ৬৬৫ কোটি টাকার তারল্য সক্ষমতা নিশ্চিত করেছে যা স্বল্পমেয়াদী দায় পরিশোধের জন্য যথেষ্ট। মহামারির মাঝেও চলতি বছরের প্রথম অর্ধ-বার্ষিকে প্রতিষ্ঠানটির পারফরম্যান্স ২০১৯ সালের প্রথম অর্ধ-বার্ষিকের পারফরম্যান্সকে ছাড়িয়ে যাবার সময়ে, মমিনুল ইসলাম বর্তমান অর্থনৈতিক প্রতিকূলতাকে বিবেচনা করে যে সকল গ্রাহক মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে এবং যে সকল অসহায় মানুষ সংকটে পড়েছেন তাদের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনে আইপিডিসির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
আইপিডিসি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দুই কোটি টাকা প্রদান করে এবং কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অন্যান্য সমাজসেবামূলক উদ্যোগের পাশে ‘মানবতা ডিপোজিট’ নামে একটি বিশেষ ডিপোজিট পণ্য প্রবর্তন করে। চলমান সংকটের সময়ে আইপিডিসি কোনও কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেনি এবং বেতন কেটে নেওয়ার মত সিদ্ধান্ত নেয়নি। তিনি আইপিডিসি-র বিভিন্ন প্রযুক্তি-নির্ভর প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে জানান যেগুলো কুটির, ছোট, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা এবং স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোর জন্য সহজে অর্থায়নের সুযোগ তৈরি করছে।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে কর্মীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠানটি সকল কার্যক্রমকে ডিজিটাল-এ রূপান্তরের মাধ্যমে বেশিরভাগ কর্মীকে ঘরে থেকেই অফিসের কাজ সম্পন্ন করার সুযোগ করে দিয়েছে। কোভিড পরিস্থিতির কারণে ঝুঁকিগ্রস্ত ব্যবসাগুলোকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করতে সরকারঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে ঋণপ্রদান কার্যক্রম বাস্তবায়নে আইপিডিসি বাংলাদেশ ব্যাংক-এর সাথে মিলে কাজ করছে।
অধিবেশনে আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মমিনুল ইসলাম বলেন, আইপিডিসি’র প্রথম অর্ধ-বার্ষিকের আর্থিক চিত্র প্রতিষ্ঠানটির কর্পোরেট সুশাসন, সক্রিয়ভাবে কৌশল প্রণয়ন এবং গ্রাহক, কর্মী ও সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণের সাক্ষ্য বহন করে। আইপিডিসি-র প্রতি আস্থা রাখার জন্য আমরা আমাদের গ্রাহক এবং সহযোগীদের ধন্যবাদ জানাই।
বিডি-প্রতিদিন/ফারজানা