রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। একইসঙ্গে মামলায় মহিউদ্দিন নামে পলাতক এক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। বুধবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামনুর রশীদ এ আদেশ দেন।
অভিযোগপত্রের ১৫ আসামি হলেন- মো. ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় হোসেন মোল্লা (২০), রিয়া বেগম ওরফে ময়না বেগম (২৯), মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ওরফে আজাদ মণ্ডল (৫০), মোহাম্মদ কামাল হোসেন (৪০), মোহাম্মদ শাহিন (৩২), মো. বাচ্চু মিয়া (৩৬), মো. বাপ্পী ওরফে শহিদুল ইসলাম (২১), মো. মুরাদ মিয়া (২৬), মো. সোহেল রানা (৩০), আসাদুল ইসলাম (২২), মো. বিল্লাল মোল্লা (৩২), মো. রাজু ওরফে রুম্মান হোসেন (২৩), মো. মহিউদ্দিন (১৮), মো. জাফর হোসেন পাটোয়ারী (১৭) ও ওয়াসিম ওরফে মো. অসীম আহম্মদ (১৪)। এর মধ্যে আসামি মো. মহিউদ্দিন পলাতক রয়েছেন। বাকি ১৪ আসামি কারাগারে। আসামি মহিউদ্দিন পলাতক থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে আজ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক আব্দুল হক ঢাকার সিএমএম আদালতে মোট ১৫ আসামির বিরুদ্ধে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে একদফা পিছিয়ে অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে শুনানির জন্য গতকাল বুধবার (২ ডিসেম্বর) দিন ধার্য করেন। আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মাজহারুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০১৯ সালের ২০ জুলাই সকালে ছেলেধরা সন্দেহে উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তাসলিমা বেগম রেনুকে বেধড়ক পেটানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ওইদিন বাড্ডা থানায় ৪০০/৫০০ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিহত তাসলিমার ভাগ্নে নাসির উদ্দিন একটি হত্যা মামলা করেন।
রেনু হত্যা মামলাটি তদন্ত করছিলেন বাড্ডা থানার ইন্সপেক্টর আব্দুর রাজ্জাক। পরে গত বছর নভেম্বরে মামলাটির তদন্তভার গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) দেওয়া হয়। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ১০ মাসের মধ্যে অভিযোগপত্র দিল সংস্থাটি।
নিহত রেনুর স্বজনদের দাবি, মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করাবে বলে খোঁজ নিতে বাড্ডার একটি স্কুলে গিয়েছিলেন রেনু এবং সেখানে গণপিটুনির শিকার হন তিনি। এ ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে তখন আটকও করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
নিহত তাসলিমার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে। মহাখালীতে চার বছরের মেয়ে তুবা ও মাকে নিয়ে থাকতেন তাসলিমা। দুই বছর আগে স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তাহসিন নামে ১১ বছরের এক ছেলেও আছে নিহত তাসলিমার।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ