বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের যারা বিদেশে রয়েছেন তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস’র বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
সোমবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক জুম অ্যাপসের মাধ্যমে আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই দাবি জানান তিনি। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ।
সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যা করেছিলেন পাকিস্তানিদের দোসররা। এই হত্যাকাণ্ড শুধু ১৪ ডিসেম্বর করা হয়েছিল তা নয়, অপারেশন্স সার্চ লাইট সংঘটিত হয়েছিল ২৫ মার্চ রাতে। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান চালিয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যা করা হয়েছে। আমি একজন বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী। বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচারে যে ট্রাইব্যুনাল হয়েছে সেখানে আমি সাক্ষীও দিয়েছি। আমার প্রিয় শিক্ষক গিয়াসউদ্দিন আহমদ। তাকে আমার সামনে থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো। এই বিচারের সাক্ষ্য দিতে গিয়ে আমি মানসিকভাবে এত বেশি বিপন্নবোধ করেছি যে বিচারপতি আদালতের কাজ স্থগিত করে আবার সময় দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আমার দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচার হওয়া। বিচার হলো। খুশি হলাম। রায় তো কার্যকর হলো না। দুই হত্যাকারী চৌধুরী মাঈনুদ্দীন, আশরাফুজ্জামান খান। এদের মধ্যে একজন মাঈনুদ্দিন আছেন ব্রিটেনে আরেকজন আছেন আমেরিকায়। প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর এলেই তাদের ফিরিয়ে আনার আশ্বাস শুনি কিন্তু কিভাবে আনবে। ওই দুই দেশের সঙ্গে বন্দী প্রত্যাবর্তন চুক্তি নেই। তবে এটি সাধন করতে হবে। আমি আশাবাদী।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ভাষা আন্দোলনে প্রথম কারাবন্দী হলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ তিনি কারাবরণ করেন। তিনি বাঙালি সত্তাকে মনেপ্রাণে ধারণ করেছেন। এরপর তিনি ক্রমান্বয়ে বঙ্গবন্ধু হয়েছেন। জাতিরাষ্ট্রের স্থপতি হয়েছেন। আজকে স্বাধীন বাংলাদেশে ২০২০ সালে এসে যিনি সৃষ্টি নাহলে বাংলাদেশ হতো না, পাকিস্তানের গোলাম থাকতাম সেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির উপর হামলা হয়, তখন অবাক লাগে। আর বুঝতে বাকি থাকে না এর সঙ্গে কারা জড়িত। ১৯৭১ সালে যারা বুদ্ধিজীবী হত্যা করেছেন তাদের দোসররাই আজকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির উপর হামলা করছে। তাদের সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।
এসময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর মো. নোমান উর রশীদ, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, কলেজ অধ্যক্ষ ও বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা আলোচনা সভায় জুম অ্যাপসের মাধ্যমে অংশ নেয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই