আন্তর্জাতিক সততা পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক মানিক সাহা হত্যার পুনঃতদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করেছেন সাংবাদিক নেতা, রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) শুক্রবার সকালে এক স্মৃতিচারণ সভায় তারা এই দাবি জানান।
তারা বলেন, এই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ায় এবং হত্যার পরিকল্পনাকারী, পৃষ্ঠপোষক, অর্থদাতাসহ ভাড়াটিয়া খুনিরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকায় স্বাধীন সাংবাদিকতা হুমকির মুখে রয়েছে।
মানিক সাহা হত্যাকাণ্ডের ১৭তম বার্ষিকীতে ‘সাংবাদিক মানিক সাহার সুহৃদবৃন্দ’ আয়োজিত স্মৃতিচারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র সাংবাদিক আশীষ কুমার দে। সাংবাদিক নিখিল ভদ্রের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল ও সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব জাকারিয়া কাজল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক আশরাফ আলী, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ দীপ আজাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ ও সাবেক সহ-সভাপতি আজমল হক হেলাল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র যুগ্ম-সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, উদীচী’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ আকমল হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য রহমান মুস্তাফিজ, বিএফইউজে’র নির্বাহী সদস্য শেখ মামুনুর রশীদ ও সাবেক নির্বাহী সদস্য রফিকুল ইসলাম সবুজ, ডিইউজে নির্বাহী কমিটির সদস্য সাকিলা পারভীন, সাংবাদিক মানিক লাল ঘোষ, সংস্কৃতি কর্মী হাসান তারেক, ইঞ্জিনিয়ার তুহীন পারভেজ প্রমুখ।
সাংবাদিক মানিক সাহার জীবন ও কর্ম সম্পর্কে নানা স্মৃতি তুলে ধরে মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় দৃষ্টান্ত রেখেছেন মানিক সাহা। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাই তার হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পারে। তাই অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। সরকারকেও সকল সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আন্তরিক হতে হবে।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, মানিক সাহা ছিলেন বুর্জোয়া শাসক শ্রেণি ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর অন্যায়, অত্যাচার ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সাহসী ও প্রতিবাদী কণ্ঠ। এ কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। সরকার ও রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতার কারণে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য এই দীর্ঘ সময়েও উন্মোচন হয়নি। তিনি সকল সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ ও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেসক্লাবের অদূরে ছোটো মির্জাপুর এলাকায় দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় মানিক সাহা নিহত হন। মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত তিনি দৈনিক সংবাদ ও নিউএজ পত্রিকার খুলনাস্থ সিনিয়র রিপোর্টার, রেডিও বিবিসি’র (বাংলা সার্ভিস) খণ্ডকালীন সংবাদদাতা এবং মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-খুলনা চ্যাপ্টারের সভাপতি ছিলেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সভার শুরুতে এক মিনিট নিরাবতা পালন করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত