রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মোবাইলের সেলসম্যান জহুরুল ইসলাম (২৩) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। তিনজনকে গ্রেফতারের পর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হয়। এর মধ্যে শুক্রবার বিকালে দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। শনিবার বিকালে রাজশাহী জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেফতার তিন আসামি হলেন, নাটোরের লালপুর উপজেলার বালিতিতা ইসলামপুর গ্রামের আকমল হোসেনের ছেলে মাসুদ রানা (২৬), কাজিপাড়া গ্রামের মৃত সানাউল্লাহর ছেলে আমিনুল ইসলাম ওরফে শাওন (৩০) এবং বাঘার জোতকাদিরপুর গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান ওরফে রকি (২৩)।
নিহত জহুরুল ইসলামের বাড়ি বাঘার মনিগ্রাম বাজারে। তার বাবার নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি বাঘার পানিকুমড়া বাজারের মেহেদী হাসান মনির টেলিকম ও ইলেক্ট্রনিক্সের দোকানে সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করতেন। গত ৬ জানুয়ারি বাঘার তেথুলিয়া শিকদারপাড়া গ্রামে তার রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়।
একটু দূরেই পড়ে ছিল তার মোটরসাইকেল। পড়ে ছিল হেলমেটও। তবে বিক্রির জন্য দোকান থেকে নিয়ে যাওয়া কিছু মোবাইল সেট তখন পাওয়া যায়নি। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পুলিশ বিভিন্নভাবে বিষয়টি তদন্ত করছিল। অবশেষে রহস্য উন্মোচন হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আসামি মাসুদ রানা ও শাওন নিহত জহুরুলের কাছ থেকে ব্যবহারের জন্য বাকিতে তিনটি মোবাইল ফোন কিনেছিলেন। জহুরুল তাদের টাকার জন্য চাপ দিতেন। কিন্তু মাসুদ ও শাওন টাকা জোগাড় করতে পারছিলেন না। তাই তারা জহুরুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় টাকা দেওয়ার নাম করে কৌশলে একটি আমবাগানে ডাকা হয়। জহুরুল সেখানে গেলে শাওন ও মাসুদ তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এরপর জহুরুলের কাছে থাকা ২৮টি মোবাইল সেট ও নগদ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। এরপর মোবাইল সেটগুলো অন্য আসামি রকির কাছে রাখেন। পুলিশ সেগুলো উদ্ধার করেছে।
পুলিশের চারঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নুরে আলম একটি টিম নিয়ে গিয়ে শুক্রবার তিনজনকে গ্রেফতার করেন। তিনি জানান, গ্রেফতারের পর আসামি শাওন ও মাসুদ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। শুক্রবারই বিকালে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। জবানবন্দী গ্রহণ শেষ হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর