রংপুরের বদরগঞ্জে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে তিন বছরের এক কন্যাশিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে অন্ধকার ঘরের ভেতর রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোচনার ঝড় তুলেছে।
গত ২১ আগস্ট উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের অরুন্নেছা সরদারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরের দিন ধর্ষণ চেষ্টার শিকার শিশুটির বাবা বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ সপ্তম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠিয়েছে।
মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ আগস্ট বিকালে খেলাধুলার সময় প্রতিবেশী এক ব্যক্তির তিন বছর বয়সী শিশুকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ তোলা হয় মোকতার হোসেনে ছেলের (১৪) বিরুদ্ধে। পরে ছেলেটিকে ধরে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ এনে শিশুটিকে প্রথমে দড়ি দিয়ে হাত-পা বাঁধা হয়। পরে দীর্ঘ সময় ধরে শিশুটিকে লাঠি দিয়ে বেদম মারপিট করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায় অন্ধকার ঘরে লাইট জ্বালিয়ে অভিযুক্ত শিশুটিকে নির্যাতন করা হচ্ছে। এক পর্যায়ে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় হয় শিশুটিকে।
শিশুটির বাবা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ছেলে নির্দোষ। খেলাধুলার ছলে শিশুটিকে একটি থাপ্পড় মারে আমার ছেলে। এ কারণে ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ করে প্রভাবশালীরা আমার ছেলেকে মারপিট করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। তিনি ছেলেকে নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে তাদের বিচার দাবি করেন।
মামলার বাদী শিশুটির বাবা বলেন, খেলাধুলার ছলে আমার মেয়েটিকে প্রতিবেশীর খড়ের তৈরি ঘরের কাছে নিয়ে অশোভন আচরণ করে ছেলেটি। পরে মেয়ের কান্নায় আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আমি থানায় মামলা দিলে পুলিশ ওকে ধরে নিয়ে যায়।
কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান দুলু বলেন, ‘শিশুটি তাদের প্রতিবেশী ৩ বছরের একটি মেয়েকে হেনস্থা করেছে বলে আমাকে জানানো হয়। আমি ভুক্তভোগী পরিবারকে আইনের আশ্রয় নেয়ার জন্য পরামর্শ দেই। বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, তিন বছরের একটি শিশুকে যৌন হয়রানীর চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় ছেলেটিকে গ্রেফতারের পর তাকে যশোরের কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর