২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২০:৩৪

১০০ টাকার হোল্ডিং প্লেট লাগিয়ে আদায় করছে ৭০০!

নাজমুল হুদা, সাভার

১০০ টাকার হোল্ডিং প্লেট লাগিয়ে আদায় করছে ৭০০!

ছবিযুক্ত এই হোল্ডিং প্লেট লাগিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে

শিল্পাঞ্চলখ্যাত সাভার উপজেলার আশুলিয়া ইউনিয়নে ভিডো এনজিও নামে এক সংস্থা অনুমোদন ছাড়াই ৯টি ওয়ার্ডের ১২ হাজার ৩০০ বাড়িতে হোল্ডিং প্লেট লাগিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ১০০ টাকার নেমপ্লেট বাড়িতে লাগিয়ে ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে- এমন অভিযোগ করেছেন হোল্ডিং প্লেট ব্যবহারকারী বসবাসরত ভুক্তভোগীরা। শুক্রবার বিকালে সরেজমিন সাভারের আশুলিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন অভিযোগ ওঠে ওই এনজিওর নামে।

ছবিযুক্ত এই হোল্ডিং প্লেট নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ১০০ টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স নেওয়ার অনুমতি থাকলেও এই সংস্থাটির কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিটা ঘর থেকে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা করে নিচ্ছে। আশুলিয়া ইউনিয়নের সূত্রে জানা যায়, এনজিওটির পরিচালক আসমা রাব্বানী নামের এক নারীর সাথে ইউনিয়ন পরিষদের রাজস্ব ট্যাক্স বাড়ানোর জন্য চুক্তি হয়, ৯টি ওয়ার্ডের ১২ হাজার তিনশত বাসাবাড়িতে হোল্ডিং নম্বরসহ প্রতিটা ঘরে ১০০ টাকার মূল্যের প্লেট লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী হোল্ডিং প্লেট ব্যবহারকারী তদবীর হোসেন বলেন, আমার এই হোল্ডিং প্লেটটা আগে নিছে ৩০০ টাকা ও পরেরটা নিছে ৬০০ টাকা। এটা দিয়া কোনো সুবিধা আমরা এখনো পাইনি। এটা আমরা দেওয়ালে লাগিয়ে রেখেছি। এখানেই শেষ। 

হোল্ডিং প্লেট ব্যবহারকারীরা অভিযোগ করেন, 'আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চেয়ারম্যানের লোকজন এসে বলে ৬০০ টাকা দাও তুমগো যা লাগে আমরা তাই দিমু। আমাদের যে হোল্ডিং নাম্বার টা দিছে সেটার আমরা কোনো পরিফল পাচ্ছি না। প্রতিবছরই চেয়ারম্যান চেঞ্জ হয় আর ডবল ডবল পয়সা নেই। কিন্তু এইডা আইনা ঘরের মধ্যে ফালাইয়া রাখছি। এটার কোনো প্রয়োজন নেই। তারপরও কেনো প্রতিবছরে চেঞ্জ হয় এটার কারণ জানিনা।'

এবিষয়ে ভিডো এনজিওর পরিচালক আসমা রাব্বানীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আইনের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়েই আমরা কাজ করছি। সবগুলো ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ডিজিটালের আওতায় আনতে বলা হয়েছে ট্যাক্স আদায়ের জন্য। মূলত আমরা এই কাজটি করছি ইউনিয়ন পরিষদের রাজস্ব বাড়ানোর জন্য। এখানে আমাদের কোনো বেনিফিট নেই। 

তবে এনজিও কর্মীদের টাকার নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, 'হোল্ডিং প্লেটের টাকা কত করে নেয় সেটা আপনাকে কেন বলবো, সেটা চেয়ারম্যানের সাথে আমার বোঝাপড়া আছে। শুনেন এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আরো অনেক কিছু আছে এবং তার বিরুদ্ধে সবাই বলতে পারবে বুঝছেন।'

আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন মাদবর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমার ইউনিয়নে ৯টি ওয়ার্ডে প্রায় ১২ হাজার ৩শত হোল্ডিং রয়েছে। এর বাইরেও আরো অনেক বাড়ি আছে যেগুলো গণনার বাইরে। কিছুদিন আগে ভিডো নামের এক এনজিও সংস্থার সাথে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের রাজস্ব উন্নয়নের জন্য ট্যাক্স ভিত্তিক প্রতি বাড়ি হোল্ডিং প্লেট থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়ার চুক্তি হয়। এমন কোনো অভিযোগ নেই। যদি কেউ অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর