৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৪:১৫
লাশ ফেলা হয় ঝাউবনে

গৃহকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক 'সন্দেহে' গৃহকর্মীকে মারধর করে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক

গৃহকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক 'সন্দেহে' গৃহকর্মীকে মারধর করে হত্যা

সংগৃহীত ছবি

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের গ্রামের বাড়ি ছেড়ে জীবিকার সন্ধানে স্ত্রী ফেন্সি আরাকে নিয়ে রাজধানী ঢাকায় আসেন মোমিনুল। মোমিনুল নিজে রিকশা চালান, স্ত্রী গৃহকর্মীর কাজ নেন। একদিন স্ত্রী ফোন করে স্বামীকে জানান, তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এরপর গত ৩ ডিসেম্বর হঠাৎ তিনি খবর পান তার স্ত্রী ফেন্সি আরার মরদেহ মিলেছে উত্তরা দিয়াবাড়ির একটি ঝাউবনে।

মোমিনুল নিজের স্ত্রীর মরদেহ শনাক্ত করার পর পিবিআই ঢাকা মেট্রো-উত্তরের একটি দল রাজধানীর গুলশান নিকেতনের ৬নং সড়কের ১৫নং বাড়ি থেকে গৃহকর্তা সৈয়দ জসীমুল হক (৬৩) ও মূল হত্যাকারী গৃহকর্ত্রী সৈয়দা সামিনা হাসানকে (৬০) গ্রেফতার করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে গৃহকর্মী ফেন্সিকে খুনের পর লাশ গুমের উদ্দেশেই উত্তরা দিয়াবাড়ী ফেলে আসার কথা স্বীকার করেন গ্রেফতারকৃতরা।

আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও ৬০ ফিট ভাঙা মসজিদ সংলগ্ন পিবিআই ঢাকা মেট্রো-উত্তর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, গত ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তুরাগ থানাধীন দিয়াবাড়ীর ঝাউবন এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে তুরাগ থানা পুলিশ। পিবিআই তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অজ্ঞাতনামা নারীর নাম-পরিচয় শনাক্ত করে। জানা যায়, নিহতের নামে পারভীন ওরফে ফেন্সি আরা। তার বাড়ি দিনাজপুর চিরিরবন্দর আলোকডিহি সরকার পাড়া। বাবার নাম রমজান আলী। স্বামীর নাম মোমিনুল হক। লাশ শনাক্তের পর পিবিআইয়ের তদন্তদল গ্রামের বাড়িতে স্বামী মোমিনুলসহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিচয় নিশ্চিত হয়।

তিনি আরও বলেন, ভিকটিম ফেন্সি দেড় বছর আগে অভাবের তাড়নায় স্বামী সন্তানসহ ঢাকায় আসেন। তিনি গুলশান নিকেতনের ৬নং সড়কের ১৫নং বাড়ির এ-১/ ফ্লাটে গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন। ওই বাড়ির গৃহকর্তা সৈয়দ জসীমুল হাসান। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গৃহকর্তা সৈয়দ জসীমুল হাসান জানান, গত ১ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে অবৈধ সম্পর্কের সন্দেহ ও ঝগড়াঝাটির একপর্যায়ে গৃহকর্তী সৈয়দা সামিনা হাসান ফেন্সিকে লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করেন। এতে তাৎক্ষণিকভাবে জ্ঞান হারায় ফেন্সি, বাঁচাতে গিয়ে বুকে চাপ দিলে বুকের হাড় ভেঙে যায় ও মৃত্যু হয়।

পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনায় গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী শলাপরামর্শ করে লাশ গোপনের উদ্দেশে ড্রাইভার রমজান আলীর (৪১) সহায়তায় প্রাইভেটকারে করে তুরাগ দিয়াবাড়ী এলাকায় ঝাউবনে ফেলে আসে। আসামিদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক মামলার সংশ্লিষ্ট আলামত প্রাইভেটকার, একটি লাঠি ও একটি বিছানার চাদর ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা হয়েছে।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর