পারিবারিক কলহের জেরে সাভারে সুতা কাটার বিশেষ অস্ত্র দিয়ে এক ব্যক্তির প্রথম স্ত্রীর চোখ তুলে নিয়েছেন তারই তৃতীয় স্ত্রী। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের সাভারের উলাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার সকালে চোখে মারাত্মক ক্ষত নিয়ে ওই স্ত্রীর চিকিৎসাধীন থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার ইউসুফ আলী।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্ত্রীর নাম নুরুন নাহার। তার স্বামী মোতালেব হোসেন। আর ভুক্তভোগী স্ত্রীর নাম সালমা বেগম (৩২)। তিনি বরিশাল জেলার হিজলা থানার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় ১৮ বছর আগে সাভারের পান ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তিনি সাভার পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড গেন্ডা ছাপড়া মসজিদ এলাকার আহাম্মদ আলীর বাড়িতে ভাড়া থেকে আল মুসলিম পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।
এলাকাবাসী জানান, সাভারের গেন্ডা এলাকার পান দোকানি মোতালেব সরকারের প্রথম স্ত্রী সালমা বেগম স্থানীয় একটি কারখানায় অপারেটর পদে চাকরি করে দুই সন্তান নিয়ে ভালোই চলছিলেন। পরে কয়েক বছর আগে সালমা বেগমের স্বামী মোতালেব সরকার সালমাকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। পারিবারিক কলহের জেরে দ্বিতীয় স্ত্রী চলে গেলে আবারও মোতালেব সরকার নুরুন নাহার নামের আরেক নারীকে বিয়ে করে রাজাবাড়ি এলাকায় বসবাস শুরু করেন। এরপরে মোতালেব সরকার আবারও প্রথম স্ত্রী সালমা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করলে তৃতীয় স্ত্রী নুরুননাহার প্রথম স্ত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত হন। পরে বৃহস্পতিবার পোশাক কারখানা ছুটির পরে প্রথম স্ত্রী সালমা বেগমকে ধরে বাম চোখ নষ্ট করে দেন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে তার স্বামী মোতালেব সরকার স্ত্রীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য এনাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করে পালিয়ে যান। বাম চোখ পুরোটাই নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দুই সন্তান নিয়ে চরম অনিশ্চিয়তায় পড়েছেন নির্যাতনের শিকার ওই নারী।
ভুক্তভোগী সালমা বেগম বলেন, আমি মোতালেব হোসেনের প্রথম স্ত্রী। আমার সঙ্গে তার সংসার প্রায় ১৮ বছর ধরে। তবে দুই তিন বছর আগে আমার স্বামী মোতালেব নুরুন নাহারকে বিয়ে করেন। আমি ১২ বছর ধরে পোশাক কারখানায় চাকরি করে উপার্জিত টাকা সংসারের কাজে লাগিয়েছি। প্রেগন্যান্সির জন্য পাওয়া ৬০ হাজার টাকাও আমি সংসারে দিয়েছি। আর নুরুননাহার বাসায় বসে বসে খেয়েছে। তবুও আমি কিছু বলি নাই। সে আসার স্বামীকে কব্জায় নিয়ে আমার সঙ্গে মোতালেবের সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছে।
ভুক্তভোগীর ভাই আল-আমীন বলেন, আমার বড় বোনকে মারধর করে তার সতীন চোখ তুলে নিয়েছেন। চোখটা ড্যামেজ হয়ে গেছে। পরে সারা শরীরে মারধর করেছে। আমরা থানায় মামলা করব।
সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোমিনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ