২৮ জুন, ২০২২ ১৯:১০

শিক্ষক উৎপল হত্যার তিন দিনেও গ্রেফতার নেই, উত্তপ্ত আশুলিয়া

সাভার প্রতিনিধি

শিক্ষক উৎপল হত্যার তিন দিনেও গ্রেফতার নেই, উত্তপ্ত আশুলিয়া

আশুলিয়ায় হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এ এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। ইতোমধ্যে বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মঙ্গলবার সকালে আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে থাকা আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নামে। একই সময় উপজেলা পরিষদের সামনে আন্দোলন করেন সাভার ও আশুলিয়া স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ। 

আন্দোলনরত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মামলার প্রধান আসামিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারসহ ৬ দফা দাবি করেন। এছাড়া দাবি আদায়ে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করতে বিক্ষোভ র‌্যালিসহ গণসংযোগ করছেন তারা। 

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- মামলার প্রধান আসামিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার, অজ্ঞাতনামা আসামিদের গ্রেফতার, প্রধান আসামি ওই ছাত্রের পলাতক পরিবারের সদস্যদের আইনের আওতায় আনা, নিহতের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ, স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্থানীয় ও বাইরের শিক্ষার্থীদের মধ্যকার ভেদাভেদ দূর করতে আইন প্রণয়ন এবং কিশোর গ্যাং ও কিশোর অপরাধ দূর করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ।  

শিক্ষক শিক্ষার্থীরা হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে ‘আমরা ন্যায় বিচার চাই’, ‘শিক্ষক হত্যার বিচার চাই’, ‘কিশোর অপরাধ দমন হোক’, ‘হত্যাকারীর ফাঁসি চাই’, ‘শিশু বলে ছাড় পাবে কেন মস্ত অপরাধ যুবক হলে এরাই গড়ে দুর্নীতির বাঁধ’- স্লোগান সংবলিত পোস্টার হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করেন। মিছিল নিয়ে তারা স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দাবি আদায়ে তাদের সঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে গণসংযোগ করেন। 

কলেজের শিক্ষক শরীফুল ইসলাম বলেন, উৎপল সরকার আমার সহকর্মী ছিলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবত এক সাথে কলেজে অধ্যায়ন করছি, গত শনিবার আমাদের স্কুল এন্ড কলেজের মাঠে প্রমিলা আন্ত ৮ম শ্রেণি ক্রিড়া প্রতিযোগিতা চলছিল । আমাদের স্কুলে দশম শ্রেণীর ছাত্র  ও এই স্কুলে মালিকের ছেলে জিতু উৎপল সরকারকে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে।

আরেকজন শিক্ষক ইলিয়াজুর রহমান রাব্বী বলেন, উৎপল সরকারকে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এখনো কোনো আলামত উদ্ধার করেনি পুলিশ। আজ আমরা শিক্ষক হত্যার বিচারের দাবিতে মাঠে নেমেছি, আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। 

আশুলিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা জিয়াউল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আসামিকে গ্রেফতার করতে র‌্যাব ও পুলিশের ৪টি টিম কাজ করছে। ঘটনার ৩ দিন পর ঘটনাস্থল থেকে ষ্ট্যাপ ও সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিদশর্ক (কলেজ) মো. রবিউল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা আজ চেয়ারম্যান স্যারের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানটিতে ঘটে যাওয়া বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করতে এসেছিলাম। এ ঘটনায় মামলাও হয়েছে কিন্তু তিন দিন ধরে মামলার প্রধান আসামি ও তার সহযোগিদের গ্রেফতার করা হয়নি। আমরা আশা করছি দ্রুত আসামি গ্রেফতার হবে।

স্কুলের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন, উৎপলের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার এঙ্গেলদানি গ্রামে। তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে হাজি ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন। 

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে। 


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর