নারায়ণগঞ্জের বন্দরে প্রাইভেটকার চালক সবুজ খন্দকারকে (৬০) হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর এলাকায় এ মানববন্ধন করা হয়। এর আগে এলাকাবাসী সবুজের খুনিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন নিহতের স্ত্রী নার্গিস বেগম, মদনপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য বাবুল ইসলাম বাবু, আব্দুল খালেক মাদবর, মজিবুর রহমান, মোখলেছুর রহমান, এমরান খন্দকার, মো. ফারুক মিয়া, মো. আতাউর রহমান, খোকন প্রধান, মামুন প্রধান, রাজু আহমেদ, নাজমুল হাসান, ডাক্তার রুবেল ও মিলন মিয়া প্রমুখ।
মানববন্ধনে খুনিদের ফাঁসির দাবিতে নিহত সবুজ খন্দকারের স্ত্রী ও স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ স্বজনরা বক্তব্য রাখেন। এসময় বক্তারা বলেন, নির্মমভাবে প্রাইভেটকার চালক সবুজ খন্দকারকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা খুনিদের অতি দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। নিহত সবুজ খন্দকারের এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে।
এর আগে, গত ৮ নভেম্বর সকালে বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার বেলোহালী গ্রামের একটি পুকুর থেকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের দেওয়ানবাগ গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিন খন্দকারের ছেলে সবুজ খন্দকারের হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দুপচাঁচিয়া থানায় নিহতের ভাই মালু খন্দকার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে সবুজ খন্দকারকে (৬০) হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ঘটনায় গ্রেফতার মাস্টার মাইন্ডসহ দু’জন বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এরমধ্যে একজনকে তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাদের হেফাজত থেকে নিহতের প্রাইভেটকার, স্যান্ডেল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতার দু’জন হলেন বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার মাগুড়া গ্রামের মৃত তছির উদ্দিনের ছেলে জহুরুল ইসলাম (৪২) ও নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার হাজিপুরের মৃত সওদাগরের ছেলে ও বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার বেলোহালী খামারগাড়ি গ্রামের আজাহার আলীর জামাতা আবুল কালাম আজাদ বাবুল (৫২)।
এর আগে, ৩ নভেম্বর সবুজ খন্দকারকে বন্দরের মদনপুর থেকে বগুড়া যাওয়ার কথা বলে গাড়ি ভাড়া করে নেন চক্রটির সদস্যরা। এরপর ৫ নভেম্বর তার স্ত্রীর সাথে শেষ কথা হয় সবুজের। তারপর থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ পান। ৬ ও ৭ নভেম্বর ভোরে সবুজের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করে সংযোগ পান। কিন্তু ফোন রিসিভ করে অন্য লোকেরা কথা বলেন।
এরপর থেকে পরিবারের সদস্যরা তার ফোন বন্ধ পেয়ে ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় জিডি করেন। গ্রেফতার জহুরুল ইসলাম গ্যারেজ মালিক ও প্রাইভেটকার চালক। আর আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাবুল ঢাকায় মাঝে মাঝে গ্যাস পাইপ লাইনের কাজ করেন। তারা দু’জন কিছুদিন আগে ঢাকা থেকে প্রাইভেটকার ভাড়া করে এনে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। তারা সবুজের প্রায় ১০ লাখ টাকা মূল্যের প্রাইভেটকার ছিনিয়ে নিয়ে বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের উদ্দেশে হত্যা ও লাশ গুমের ঘটনা ঘটায় বলে স্বীকার করেছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক