ঢাকার ধামরাইয়ে এক বছর আগে মারা যাওয়া ফুল খাতনু (৮৫) কীভাবে লাঠি ভর করে আসলেন ধামরাই উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে। এনিয়ে অফিস পাড়ায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আসলেই ফুল খাতুন কি না, তা নিয়ে করা হয়েছে নানা যাচাই-বাছাই। কারণ সমাজসেবা কার্যালয়ের রেকর্ডে তাকে মৃত দেখানো হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার তাকে কাগজপত্রে মৃত দেখিয়ে তার নামের বয়স্ক ভাতা বন্ধ করে ফুল বানু নামে অপর এক নারীর কার্ড করে দিয়েছেন। আলোচিত এই ঘটনা ঘটেছে ধামরাইয়ের যাদবপুর ইউনিয়নে।
জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের গরুগ্রাম এলাকার মৃত আব্দুল গফুরের স্ত্রী ফুল খাতুন অসহায় ও দুস্থ। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছিলেন। তখন তাকে যাদবপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেয়া হয়। তিনি এই কার্ড পাওয়ার পর সরকারিভাবে প্রতি তিন মাস পরপর ১৫০০ টাকা পান। তা দিয়েই তিনি কোনোভাবে জীবনযাপন করে আসছিলেন।
কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে তার মোবাইল ফোনে টাকার কোনো মেসেজ না যাওয়ার কারণে তিনি আর টাকা পাচ্ছেন না। গতকাল তিনি অনেক কষ্ট করে লাঠি ভর দিয়ে ধামরাই উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে আসেন এবং টাকার মেসেজ না যাওয়ার বিষয়টি জানতে চান। তখন অফিসের লোক ওই বৃদ্ধার ফাইল দেখে অবাক হন এবং বলেন আপনি তো মারা গেছেন, তাহলে অফিসে এলেন কীভাবে?
এ নিয়ে শুরু হয় তোলপাড় এবং বিষয়টির যাচাই-বাছাই করা হয়। অবশেষে জানা গেল ফুল খাতুন মারা যায়নি। কিন্তু যাদবপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান তাকে কাগজপত্রে মৃত দেখিয়ে তার পরিবর্তে রহস্যজনকভাবে ফুল বানু নামে আরেক নারীকে এই কার্ড করে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ফুল খাতুন সাংবাদিকদের জানান, মৃত্যুর আগেই মেম্বার আমাকে মেরে ফেলেছে। এতে তিনি অবাক হন এবং কান্নায় ভেঙে পড়েন।
অভিযুক্ত ইউপি মেম্বার আব্দুল মান্নানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু জানান, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। সমাজসেবা অফিসকে বলে ফুল খাতুনের নামেই বয়স্ক কার্ড করে দেওয়া হবে।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. হাসান জানান, বিষয়টি অবাক হওয়ার মতো। কারণ জীবত মানুষকে মৃত দেখিয়ে যে কাজ করা হয়েছে, তা অন্যায়। আমরা যাচাইয়ে দেখেছি ফুল খাতুন জীবিত রয়েছেন। তাই বয়স্ক ভাতার কার্ড ফের তার নামেই হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই