জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের সবচাইতে পুরনো বন্ধু। বৈশ্বিক সংকটময় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ও ভারত শুধু ভৌগোলিক সীমান্তেই আবদ্ধ নয়, পঞ্চাশ বছর ধরে দুই দেশের শিল্প, সাহিত্য, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানাক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা লক্ষ্যনীয়। এসময় তিনি আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক কিভাবে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচাইতে সুসংহত করা যায় সে বিষয়ে দু’দেশকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সফররত ভারতের আসাম আইনসভার স্পিকার শ্রী বিশ্বজিৎ দাইমারি’র নেতৃত্বে সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সাথে আজ মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।
সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মোঃ শামসুল হক টুকু, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, হুইপ ইকবালুর রহিম ও সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম উপস্থিত ছিলেন। এসময় বাংলাদেশ-ভারত সুদীর্ঘ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বিনিয়োগ, দু’দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এর আগে আসাম আইনসভার সংসদীয় প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ পরিদর্শন করেন। সাক্ষাৎ শেষে প্রতিনিধিদল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সফররত সংসদীয় প্রতিনিধি দলের কাছে বাংলাদেশের উন্নয়নের রূপরেখা তুলে ধরে বলেন, পদ্মাসেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বঙ্গবন্ধু টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ইত্যাদি নির্মাণ কাজ চলমান। কোভিডের বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও সরকারের যুগোপযোগী পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশে খাদ্য সংকট হয়নি।
আসাম বিধানসভার স্পিকার শ্রী বিশ্বজিৎ দাইমারি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ভারতের অকৃত্রিম বন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার মূর্ত প্রতীক। বাংলাদেশের চলমান অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়ন সত্যি অনুসরণীয়। বাংলাদেশের সংসদে উল্লেখযোগ্য নারী সংসদ সদস্যের অংশগ্রহণ প্রশংসনীয়। তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের সুদীর্ঘ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পকের কথা স্মরণ করেন। এসময় তিনি বাংলাদেশ ভ্রমণের মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে সংসদীয় প্রতিনিধিদলের জন্য সহায়ক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকারকে আসাম বিধানসভা পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানালে ড. শিরীন শারমিন এমপি তা সাদরে গ্রহণ করেন। ভবিষ্যতে সুবিধাজনক সময়ে পরিদর্শনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের তৎকালীন সরকার প্রধান শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর কূটনৈতিক প্রজ্ঞা ও আদর্শিক নেতৃত্বই দু’দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের ভীত স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ সম্পর্ক আরো প্রতিষ্ঠিত ও সুসংহত হয়। মুজিব শতবর্ষের অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর দুদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ককে জোরদার করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঙ্গার পানিবন্টন চুক্তি, ভারতের সাথে স্থল সীমানা চুক্তি ইত্যাদি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এসময় ভারতকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়েয় উভয় দেশের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এসময় দুদেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল