বাংলাদেশবিরোধী ধারাবাহিকভাবে অপপ্রচার ও তৎপরতার বিষয়ে সতর্ক থাকতে জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন দেশের ২১ বিশিষ্ট নাগরিক।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তাঁরা এই অনুরোধ জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি কাতারভিত্তিক একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যেখানে ব্রিটিশ এক আইনজীবী বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সরকারকে সুপারিশ করেছেন বলে জানা গেছে। এই ব্রিটিশ আইনজীবীর সাক্ষাৎকার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনি মানবাধিকার ইস্যুকে পুঁজি করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছেন। তাঁর অতীত বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাই, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত দল জামায়াত ইসলামের পক্ষে আইনজীবী হয়ে ২০১১ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছেন টবি ক্যাডম্যান নামের এই আইনজীবী।’
বিবৃতিদাতারা বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যক্রম শুরু হলে তা বন্ধের জন্য এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের রক্ষায় ২৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী লবিস্ট ফার্মগুলোর মধ্যে একটি ক্যাসিডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের সঙ্গে। আর এ সময় থেকেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে এই লবিস্ট গোষ্ঠী।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন করা ও আন্তর্জাতিক জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত দল জামায়াতে ইসলামী বিজয়ের মাসে কর্মসূচি ডেকেছে, যা মোটেও কাম্য নয়। ২০১১ সাল থেকে এই জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন ক্যাডম্যান। জামায়াতে ইসলামী, যাদের তত্ত্বাবধায়নে বাংলাদেশে ১০ ট্রাক অবৈধ অস্ত্র প্রবেশ হয়। তাদের মাধ্যমেই দেশের সব জেলায় একযোগে বোমা হামলা চালানো হয়। বাংলাদেশের সব জঙ্গি ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে তাদের।
আর সেই গোষ্ঠীর পক্ষে লবিং করে বাংলাদেশের ওপর মানবাধিকার ইস্যুতে বিবিধ নিষেধাজ্ঞা ও অর্থনৈতিক অবরোধের জন্য সুপারিশ করে যাচ্ছেন তাঁরা।
বিবৃতিদাতারা বলেন, এই গোষ্ঠীটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মানবাধিকারকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে বাংলাদেশবিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জন্য মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের পক্ষ নিয়ে এ ধরনের অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই আমরা। যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে, তাদের পক্ষে এ ধরনের লবিং এবং মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে তাদের পক্ষ হয়ে বাংলাদেশের ওপর অবরোধ আরোপের জন্য সুপারিশ করার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। একই সঙ্গে সরকারের মানবাধিকারের বিষয়ে কোনো র্কাযক্রম যেন এই অপশক্তিকে সুযোগ সৃষ্টি না করতে পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।
বিবৃতিদাতারা হলেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য, ডা. সারওয়ার আলী, রামেন্দু মজুমদার, রাশেদা কে চৌধুরী, নুর মোহাম্মদ তালুকদার, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, খুশী কবির, ডা. রশিদ-ই-মাহবুব, এম এম আকাশ, অধ্যাপক শফী আহমেদ, রানা দাশ গুপ্ত, রোবায়েত ফেরদৌস, সালেহ আহমেদ, জাহিদুল বারী, পারভেজ হাসেম, সৈয়দ আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, রঞ্জিত কুমার সাহা, জোবাইদা নাসরিন, এ কে আজাদ, আবদুল ওয়াহেদ ও জহিরুল ইসলাম।