মাদারীপুরে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল চালককে হত্যার দায়ে দুইজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদাউস এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের পাঁচখোলা গ্রামের আউয়ালী বেপারীর ছেলে সজিব বেপারী (২৭) ও একই গ্রামের আব্দুল খানের ছেলে মিঠুন খান (৩১)।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর মাদারীপুর সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়নের পূর্ব রাস্তি গ্রামের রবিউল মাতুব্বরের ছেলে বোরহান মাতুব্বর (১৮) জীবিকা নির্বাহের জন্যে ভাড়ায় একটি মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়। এরপর তাকে আর পাওয়া যায়নি। পরের দিন ১ জানুয়ারি সদর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। ২ জানুয়ারি বোরহানের মোটরসাইকেলটিসহ সজীব বেপারী ও মিঠুন খানকে সাতক্ষীরা জেলার তালা থানায় আটক করা হয়।
তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি মাদারীপুরের আড়িয়াল খাঁ নদের কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা থেকে বোরহানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই সজীব বেপারী ও মিঠুন খানকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা রবিউল মাতুব্বর। ওই বছরের ১০ জুলাই তিনজনকে দোষী করে চার্জশিট দেন সদর থানার এসআই বারেক করিম খান। মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর জবানবন্দি শেষে রায় দেওয়া হয়। রায়ে সজিব বেপারী ও মিঠুন খানকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে লাভলু গাজী নামে একজনকে খালাস দেওয়া হয়। রায়ে বাবা ও রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি জামিনে এসে পলাতক রয়েছে।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর দায়রা ও জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, আসামিরা মাত্র এক লাখ টাকার একটি মোটরসাইকেলের জন্যে একজন গরিব অসহায় বাবার সন্তানকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এটা সমাজের জন্যে খুবই খারাপ ও নির্মম ঘটনা। ফলে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সর্বোচ্চ দিয়ে রায়টি করার চেষ্টা করেছি। ফলে দুই জনকেই ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। এতে আমরা খুশি।
মামলার বাদী নিহতের বাবা রবিউল মাতুব্বর বলেন, আমার ছেলেকে যারা নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি দেওয়ায় আমি আনন্দিত। তবে রায়টি যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়, সেদিকে সরকারকে বিনয়ের সাথে অনুরোধ করবো।
বিডি প্রতিদিন/এমআই