ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। এ স্বাধীনতা অর্থবহ করতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইসলামের পক্ষে একক বাক্স দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে এবং এটি চলমান রয়েছে।
শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে ‘আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ তোষণে নয়, ইসলামের বিজয়েই দেশবাসীর মুক্তি নিহিত’ এই প্রতিপাদ্যে এবং ‘২৪-এর গণহত্যার বিচার এবং সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে জনমত গড়ার আহ্বানে আয়োজিত নগর সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নগর সম্মেলনে পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, অন্য ধর্ম ও মতে অশান্তি কমে না বরং বাড়ে, চুরি কমে না বরং বাড়ে, লুটপাট, রাহাজানি, দুর্নীতি কমে না বরং বাড়ে। আর ইসলাম এমন এক ধর্ম যেখানে দুর্নীতি, লুটপাট, চুরি, বাটপারির কোনো সুযোগ নেই। চাঁদাবাজ, দখলদারের কোনো আশ্রয় প্রশ্রয় ইসলামে নেই।
মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছরেও আমরা স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারিনি। এই লম্বা সময় ধরে যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল তাদের অনেকেই রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করেছে। বিদেশে বেগমপাড়া তৈরি করেছে। দেশকে বিশ্ব-দরবারে বারবার চ্যাম্পিয়ন করার খেতাব অর্জন করেছে।
সংগঠনের যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা দিলাওয়ার হোসাইন সাকী।
দলের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানি বলেন, আমরা সোনার বাংলা দেখেছি, সবুজ বাংলা দেখেছি, এবার আমরা ইসলামের বাংলা দেখতে চাই।
মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ বলেন, আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ। ইসলামের বাংলা গড়তে হলে দায়িত্বশীল কর্মীদের ত্যাগ এবং কোরবানির নজরানা পেশ করতে হবে।
অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, ইসলাম ছাড়া মানবতার মুক্তি নাই। ইসলামের সুফল গণমানুষের কর্ণকুহরে পৌঁছে দিতে হবে। পাড়া-মহল্লায় ইসলামের দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। আগামী নির্বাচনে ইসলামের পক্ষে ব্যাপক জনমত গঠন করতে হবে।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, জুলাই বিপ্লবে অন্যতম শক্তি ছাত্র-জনতার সাথে বিএনপি বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়েছে। এ বাকবিতণ্ডায় আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলছে। এতে করে নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমরা দেখছি একটি দল বর্তমান সরকারের কাছে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে। কোনো দলকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার জন্য জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান হয়নি।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হক, ছাত্রনেতা মুনতাসির আহমাদ, আলহাজ আলতাফ হোসাইন, আলহাজ আনোয়ার হোসাইন, আলহাজ আবদুল আউয়াল, ডা. শহীদুল ইসলাম, মাওলানা মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, নুরুজ্জামান সরকার, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, আলহাজ ফজলুল হক মৃধা, আলহাজ নজরুল ইসলাম খোকন, মাওলানা কামাল হোসাইন প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম ভারতের উদ্দেশে বলেন, প্রতিবেশী আছেন, প্রতিবেশী হয়ে থাকেন। এর বাইরে কিছু করতে চাইলে বাংলাদেশের জনগণ সহ্য করবে না।
সম্মেলন শেষে আগামী ২০২৫-২৬-এর জন্য মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমকে সভাপতি ও আলহাজ আবদুল আউয়াল মজুমদারকে সেক্রেটারি করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল