তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর সদরঘাটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে একটি লঞ্চের মালিক-শ্রমিকরা। এ ঘটনায় নয় শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একইসাথে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাতে অভিযান চালিয়ে কিরণ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে যৌথবাহিনী।
বৃহস্পতিবার রাত আটটায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের ৯ নং পল্টুনে সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন— ফিন্যান্স বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের নাবিল ও মুশফিক, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ওমর ফারুক জিলন ও একই শিক্ষাবর্ষের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের শের আলী এবং দর্শন বিভাগের টিঙ্কু, সংগীত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ব্রজ গোপাল রায়, আইন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ইমরোজ সিদ্দিক ও একই শিক্ষাবর্ষের থিয়েটার বিভাগের আনিছ ও টিঙ্কু, মাকসুদুল হক (ইসলামিক স্টাডিজ, ১৪তম ব্যাচ), রিহাব (কবি নজরুল কলেজ) এবং মুজাহিদ (সোহরাওয়ার্দী কলেজ)। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সদরঘাটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী ঘুরতে আসলে তাদের সাথে অশোভন আচরণ করেন লঞ্চের শ্রমিকরা। এরপর তাদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে লঞ্চে থাকা শ্রমিকরা ওই দুই শিক্ষার্থীকে চড়থাপ্পড় দেয়। এরপর ওই দুই শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে গিয়ে তার ১০-১২ জন সহপাঠীদের নিয়ে এসে মারার কারণ জিজ্ঞেস করতে আসলে তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে পুনরায় রড, বাঁশ ও দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা করেন লঞ্চের শ্রমিকরা। এরপর খবর পেয়ে ক্যাম্পাসের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে জড়ো হলে ওই লঞ্চের মালিক-শ্রমিক সবাই পালিয়ে যায়। এ-সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা লঞ্চ টার্মিনালে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং ওই লঞ্চে ভাঙচুর করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। ইতোমধ্যে পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার বিষয়ে লালবাগ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল হক বলেন, আমি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা মালমা করলে আমরা সর্বোচ্চ দ্রুত সময়ে অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে কিরণ নামে একজনকে যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক করা হয়েছে। এখনো তার রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদ চলমান রয়েছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা চার দফা লিখিত দাবি জানান পুলিশকে। দাবিগুলো হলো—
১) আক্রমণকারী কিরণকে সদরঘাটে গ্রেফতার দেখাতে হবে।
২) কিরণের সাঙ্গপাঙ্গদের গ্রেফতার করতে হবে।
৩) অস্ত্র -শস্ত্র সহ আক্রমণের উপকরণ উদ্ধার করতে হবে।
৪) ঘাটের ইজারাদার এবং আক্রমণের মূল হোতা সুমনকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন