মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

কার্যক্রম নেই চট্টগ্রাম যুবলীগের সিলেটে বেপরোয়া ছাত্রলীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ও সিলেট

কার্যক্রম নেই চট্টগ্রাম যুবলীগের সিলেটে বেপরোয়া ছাত্রলীগ

তিন মাসের মধ্যে ওয়ার্ড ও থানা কমিটি গঠনের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা থাকলেও আড়াই বছরে তা করতে পারেনি চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি। ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে নামমাত্র ৬টিতে কমিটি হয়েছে। কাগজেই সীমাবদ্ধ নগর যুবলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম। অফিসকেন্দ্রিক কার্যক্রম ছাড়া দৃশ্যমান কিছুই হচ্ছে না বলে অভিযোগ তৃণমূল কর্মীদের। তবে গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ বিভিন্ন দলীয় কর্মকাণ্ডে নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ অবস্থায় আগামীতে নগর যুবলীগের নেতৃত্বে কারা আসছেন তা এখন সবার মুখে মুখে। ত্যাগীদের নেতৃত্বে এনে দ্রুত কমিটি ঘোষণা না করলে সাংগঠনিকভাবে সংগঠনটি দুর্বল হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেন নগর কমিটির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা। এদিকে, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে যথাসময়ে সম্মেলন করতে পারেননি বলে দাবি করেন যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু। তিনি বলেন, ৬টি ওয়ার্ড ও ৩টি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে যত দ্রুত সম্ভব ওয়ার্ড কমিটি গঠন করেই চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সম্মেলন করা হবে। তবে ‘উঠান বৈঠকের মতো’ নিয়মিত প্রতিটি ওয়ার্ডে যুবলীগের কর্মকাণ্ড চলছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এদিকে সিলেটে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগ। রাজনীতির চেয়ে নিজেদের মধ্যে হানাহানিতে বেশি ব্যস্ত সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। আধিপত্য বিস্তার ও ভাগবাটোয়ারা নিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে ঘটছে রক্তপাত। ছাত্রলীগের বেপরোয়া ভাব, সংঘর্ষ ও অস্ত্রের ব্যবহার সিলেট নগরবাসীকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে সর্বশেষ হামলার শিকার হয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম রায়হান চৌধুরী। রবিবার রাতে টিলাগড়ে ক্যাডারদের হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি।

শনিবার রাতে সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ শাখার কমিটি ঘোষণা করেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক এম রায়হান চৌধুরী। এ কমিটি মেনে নিতে পারেননি ছাত্রলীগ টিলাগড় গ্রুপের একাংশের নেতা-কর্মীরা। এর জেরে রবিবার রাতে টিলাগড় পয়েন্টে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলামের সমর্থকরা রায়হানের ওপর হামলা চালান। এতে গুরুতর আহত হন রায়হান। রায়হানের ওপর হামলার খবর পেয়ে তার সমর্থকরা টিলাগড় পয়েন্টে এলে কামরুল সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হন। পুলিশ গুলি ছুড়ে ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করে। সংঘর্ষ চলাকালে টুটুল নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। সংঘর্ষের সময় টিলাগড় পয়েন্টে অন্তত সাতটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়। এর প্রতিবাদে গতকাল টিলাগড়ের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন করে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন। এদিকে, গতকাল আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সিলেটের বিয়ানীবাজার কলেজে ছাত্রলীগের মূলধারা ও পাভেল গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। এর আগে কোরবানির পশুর অবৈধ হাটের কমিশনের টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে উপশহরে ছাত্রলীগের জাকারিয়া মাহমুদ ও শামীম ইকবাল গ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। শনিবার ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মদন মোহন কলেজে নিজ দলের ক্যাডারদের হামলায় ছুরিকাহত হন রুমেল আহমদ নামের এক কর্মী। গত মাসের শেষের দিকে আধিপত্য নিয়ে নগরীর খাসদবীরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি মোহন মিয়াসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন। গত সপ্তাহে ওসমানী হাসপাতালে নিজ দলের ক্যাডারদের হামলায় ছাত্রলীগের দুই নেতা ছুরিকাহত হন। আগস্টে মদন মোহন কলেজে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান আবদুল আলী নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী। ছাত্রলীগের হানাহানি প্রসঙ্গে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম তুষার বলেন, সংগঠনের নাম ব্যবহার করে যারা অপকর্ম করছেন তাদের দায় ছাত্রলীগ নেবে না।

এদের ব্যাপারে কেন্দ্রকে অবগত করা হচ্ছে। কেন্দ্রের পরামর্শে এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ বলেন, টিলাগড়সহ অন্যান্য স্থানে যারা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন তাদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে। তাদের চিহ্নিত করে কেন্দ্রের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাত্রলীগে কোনো সন্ত্রাসীর ঠাঁই হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর