বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিচারের মুখে ৫০ জনপ্রতিনিধি

বগুড়ায় সরকারি অফিস, পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা-মামলায় আসামি দাখিল হয়েছে চার্জশিটও

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

সরকারি অফিস ও পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং গত সংসদ নির্বাচনের দিন সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা, হরতালের নামে নাশকতা সৃষ্টির মামলাসহ বিভিন্ন বিস্ফোরক মামলায় আসামি হয়েছেন বগুড়ার অর্ধশতাধিক জনপ্রতিনিধি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে। দাখিলকৃত চার্জশিট আদালত গ্রহণ করলেও বহাল তবিয়তে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন জনপ্রতিনিধিরা। রাজনৈতিক এসব মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি জনপ্রতিনিধিরা হচ্ছেন— বগুড়ার ধুনট উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম তৌহিদুল আলম মামুন। তার বিরুদ্ধে নাশকতা ও বিস্ফোরকসহ মামলা রয়েছে ৪টি। আদালত ৪টি মামলারই চার্জশিট গ্রহণ করেছে। জেলার সোনাতলা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকির এবং শেরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি আলহাজ দবিবুর রহমান ও শেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা স্বাধীন কুমার কুণ্ডর বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। এ ছাড়া বগুড়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আজগর তালুকদার হেনার বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা ১টি, একই পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা আবিদুর রহমান সোহেলের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, নাশকতা, বিস্ফোরকসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৬টি মামলা রয়েছে। একই পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাজেদা সামাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী মামলা রয়েছে ১টি। সাজেদা সামাদ মাঝে মাঝে অফিসে আসছেন। বগুড়া পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও জেলা যুবদল সভাপতি সিপার আল বখতিয়ারের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ২২টি। শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা আবু নছর মো. আলমগীর হুসাইনের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা রয়েছে। কিছু দিন আগে তিনি বরখাস্ত হয়েছিলেন। এখন আবার তিনি তার নিজ দায়িত্বে বহাল হয়েছেন। জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা আবদুল গনি মণ্ডলের ৪টি, দুপচাঁচিয়া তালোড়া পৌরসভার মেয়র মো. আবদুল জলিলের বিরুদ্ধে ৩টি, নন্দীগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম মণ্ডলের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা রয়েছে। তিনি এসব মামলায় একবার বরখাস্তও হন। এরপর আইনি প্রক্রিয়ায় আবার তিনি নিজ দায়িত্বে বহাল হন। গাবতলী উপজেলা বিএনপি নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোর্শেদ মিল্টনের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা, গাবতলী পৌরসভার মেয়র সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধেও রয়েছে একাধিক মামলা। জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে ৭ উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেই মামলা রয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ৬ জন, পৌর মেয়র ৩ জন, পৌরসভার কাউন্সিলর ৭ জন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ১০ জন, ইউনিয়ন সদস্য বা মেম্বার ২৬ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ১ জন, ভারপ্রাপ্ত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ১ জনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এসব মামলার কারণে কোনো কোনো জনপ্রতিনিধি বরখাস্ত হয়েছিলেন। আবার নিজ পদে বহালও হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বগুড়ার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক সুফিয়া নাজিম জানান, মামলায় দোষী প্রমাণ হয়ে বরখাস্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা সরকারি কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন। যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাদের তালিকা পাওয়া গেছে এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর