মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

কোটি টাকা নিয়ে উধাও ইন্স্যুরেন্স কর্মকর্তা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেট নগরীর আখালিয়ার বাসিন্দা সেলিনা বেগম। তিলে তিলে জমানো নিজের কষ্টের টাকা দিয়ে ইন্স্যুরেন্স করেছিলেন মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে। কয়েক বছর ধরে ইন্স্যুরেন্সের টাকা জমা করে আসছিলেন তিনি। টাকা জমার রসিদও পাচ্ছিলেন। তবে গত বছরের শেষ কয়েক মাস থেকে চলতি      বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টাকা জমার পরও সেলিনা বেগমকে রসিদ দিচ্ছিলেন না কোম্পানির সিলেট জোনের ইনচার্জ এইচ এম শাহীন। শুধু সেলিনা বেগমই নয়, তার মতোই চার শতাধিক গ্রাহক টাকা জমার রসিদ পাননি। নানা টালবাহনায় সময় পার করা শাহীনের কারসাজি শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েছে। গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন তিনি। কোম্পানিও তাকে খুঁজছে হন্যে হয়ে। বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা গত কয়েকদিন ধরে সিলেট নগরীর বন্দরবাজারের করিম উল্লাহ মার্কেটে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কার্যালয়ে গিয়ে তাদের টাকা ফেরত চাচ্ছিলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে গতকাল সকালে সিলেটে আসেন কোম্পানির ডিএমডি রকিবুল হাসান সুমন। কিন্তু সর্বস্বান্ত গ্রাহকদের কোনো সমাধান দিতে পারেননি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সিলেট জোনের ইনচার্জের দায়িত্বে ছিলেন এইচ এম শাহীন। এ সময়ের মধ্যে শত শত মানুষ ইন্স্যুরেন্স করেন। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। গ্রাহকদের ইন্স্যুরেন্স জমার রসিদও প্রদান করছিলেন শাহীন। তবে গেল বছরের শেষ কয়েক মাস থেকে টাকা জমার রসিদ প্রদান বন্ধ করে দেন তিনি। গ্রাহকদের ‘রসিদের সংকট রয়েছে’ ‘পেয়ে যাবেন’ ‘কেন্দ্রীয় অফিস থেকে রসিদ আসছে না’ এসব কথা বলে তিনি সময় নিচ্ছিলেন।

প্রতারিত গ্রাহক সেলিনা বেগম, সিরাজ উদ্দিন ও সোনিয়া আক্তার বলেন, রসিদ না দিয়ে নিজের ভিজিটিং কার্ডে কিংবা সাদা কাগজে টাকা জমা নেওয়ার বিষয়টি লিখে দিতেন তিনি। কয়েক বছরের পরিচিত হওয়ায় শাহীনের প্রতি সন্দেহ জন্ম নেয়নি গ্রাহকদের। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চার শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে রসিদ ছাড়াই প্রায় কোটি টাকা জমা নেন তিনি। মার্চ মাস থেকে তার আর দেখা মিলছিল না। তখন ইন্স্যুরেন্স অফিসে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়- শাহীন টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছেন।

এ ব্যাপারে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সিলেট অফিসের কর্মকর্তা নিবাস রঞ্জন চয়ন বলেন, এইচ এম শাহীন গত ফেব্রুয়ারি থেকে পলাতক। তিনি কোম্পানির একটি গাড়িও নিয়ে গেছেন। পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে শত শত গ্রাহক অফিসে এসে অভিযোগ দিচ্ছেন। তাকে খোঁজার চেষ্টা করছি।

এদিকে প্রতারিত গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলতে গতকাল সিলেটে আসেন কোম্পানির ডিএমডি রকিবুল হাসান সুমন। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখা ও শাহীনকে খুঁজে বের করার আশ্বাস দেন।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর