মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা
ডেঙ্গুর প্রকোপ

নিয়ন্ত্রণের বাইরে ওষুধের বাজার

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

সাধারণ সময়ে ভারতীয় ৫০ গ্রাম ওজনের একটি ওডোমস ক্রিম বিক্রি হতো ১৫০ টাকায়। কিন্তু এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। সঙ্গে বাজারে চলছে এ ওষুধের কৃত্রিম সংকট। পক্ষান্তরে, মশা তাড়াতে কাপড়ে দেওয়ার রিপিলেন্ট ফেব্রিক রোল অন আগে বিক্রি হতো ৮০ থেকে ৯০ টাকায়, কিন্তু এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। তাছাড়া ৫ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়েছে মশার কয়েলের।

দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাওয়ার পর থেকে এসব পণ্যের এমন অবস্থা চলছে। ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেওয়ায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর জন্য পোয়াবারো অবস্থা হয়েছে। যে যার ইচ্ছামতো ব্যবসা করে যাচ্ছেন। ভুক্তভোগী ক্রেতাদের অভিযোগ, দেশে যে কোনো সংকটময় সময়ে চাহিদা থাকা পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা একশ্রেণির ব্যবসায়ীর অভ্যাস। কিন্তু এ অভ্যাসের লাগাম টেনে ধরতে বাজার কঠোরভাবে তদারকি করা জরুরি। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া উচিত। ওষুধ বিক্রেতারা বলেন, বাজারে মশা মারার ওষুধের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এ চাহিদাকে পুঁজি করে নিজেদের কাছে ক্রিম ও ওষুধ মজুদ রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে। তারা গোপনে এসব ওষুধ বিক্রি করলেও দাম আদায় করছে কয়েকগুণ বেশি। কিছু খুচরা ব্যবসায়ী তাদের কাছ থেকে এসব ওষুধ বর্ধিত মূল্যে ক্রয় করে বাজারে বিক্রি করছে। ক্যাবের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় পর থেকে মশা মারার ক্রিমসহ নানা ওষুধ সামগ্রীর দাম স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বিষয়টি আমরা অবহিত। এর কারণে ভোক্তারা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। আমরা মনে করি, প্রশাসনের এ ব্যাপারে বাজার মনিটরিংটা আরও জোরদার করা জরুরি।’ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘ওডোমস ক্রিম এবং রিপিলেন্ট ফেব্রিক রোল অন দুটিই অবৈধ। এ দুটি পণ্য বিক্রি করাও অবৈধ। কারণ এটির কোনো আদমানিকারক নেই এবং পণ্যের গায়ে বাংলাদেশি টাকায় মূল্য লেখা নেই। তবে বর্তমান সংকটময় মুহূর্তে পণ্য দুটি অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি না করতে ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে।’ গত ২০ জুলাই থেকে চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। তখন থেকে এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে প্রায় ৮০০ রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। আক্রান্তের এমন হার অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। ২০১৭ সালে আক্রান্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৬৬ জন এবং ২০১৮ সালে এ হার ছিল ১৭৭ জন।

সর্বশেষ খবর