মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ট্রেনের দুর্ঘটনা রোধে অটোসিগন্যাল ট্রান্সমিটার উদ্ভাবন

নাটোর প্রতিনিধি

ট্রেনের দুর্ঘটনা রোধে অটোসিগন্যাল ট্রান্সমিটার উদ্ভাবন

একের পর এক ঘটছে ট্রেন দুর্ঘটনা। মারা যাচ্ছে মানুষ। দাবি উঠেছে ট্রেনের ব্যবস্থাপনায় আধুনিকতা আনার। ঠিক তখনই ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে অটোসিগন্যাল ট্রান্সমিটার উদ্ভাবন করলেন নাটোরের মনোয়ার হোসেন মিঠু -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পর উদ্বেগে দেশের মানুষ। ভ্রমণের জন্য এ বাহনটিকে নিরাপদ মনে করা হতো। তবে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অবহেলা, লাইনের ত্রুটি, অনিরাপদ লেভেলক্রসিংসহ বিভিন্ন কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা। ফলে আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না রেল ভ্রমণকারীদের। এমন সময় লেভেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা রোধে সুখবর দিলেন নাটোরের মনোয়ার হোসেন মিঠু। অটো সিগন্যাল ট্রান্সমিটার নামে একটি যন্ত্র উদ্ভাবনের দাবি করেছেন এই যুবক। যন্ত্রটি লেভেলক্রসিংয়ের বারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওঠানামা করাবে। নাটোরের সিংড়া পৌরসভার গোডাউনপাড়ার মৃত রওশন আলীর ছেলে মনোয়ার হোসেন মিঠু পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বগুড়া কার্যালয়ের মিটার রিডার। কাজের ফাঁকে দুর্ঘটনা প্রতিরোধের আগাম সিগন্যাল উদ্ভাবন করেন। তিনি দাবি করেন, তার উদ্ভাবিত অটো সিগন্যাল ট্রান্সমিটারটি স্বয়ংক্রিয়। এটি লেভেলক্রসিংয়ে সিগন্যাল ডাউন দিতে জনবল লাগবে না। স্বয়ংক্রিয় এই অটো সিগন্যাল ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে লেভেলক্রসিংয়ের ব্যারিয়ার ওঠানামা করবে। ট্রেন আসার ৫-৭ মিনিট আগেই স্বয়ংক্রিয় অটো সিগন্যাল ট্রান্সমিটার নেমে যাবে এবং ট্রেন চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ঊঠে যাবে।

নতুন যন্ত্রটি কীভাবে কাজ করবে- এ প্রসঙ্গে মিঠু বলেন, ‘যন্ত্রটি ট্রেনের সঙ্গে লাগানো থাকবে। থাকবে লেভেলক্রসিংয়ের বারের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত। ক্রসিংয়ে ট্রেন পৌঁছানোর ৫-৭ মিনিট আগেই যন্ত্রটির সংকেত পেয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ক্রসিং বারটি নেমে যাবে। ট্রেন চলে যাওয়ার পর তা আবার উঠে যাবে। এ ক্ষেত্রে মানুষের কোনো সাহায্য লাগবে না। ফলে লেভেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে।’

এর আগে তিনি স্লিপার দুর্বৃত্তায়ন ও লাইনচ্যুতির কারণে ট্রেন দুর্ঘটনা রোধেও ট্রান্সমিটার উদ্ভাবন করেন। তার উদ্ভাবিত যন্ত্র সম্পর্কে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ৭ জুলাই রাজশাহীর পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক হারুন অর-রশিদ তাকে ডাকেন। সেখানে তার উদ্ভাবিত অটো সিগন্যাল ট্রান্সমিটার পরীক্ষা করে তারা শতভাগ সফলতা পান। কিন্তু রহস্যজনক কারণে বিষয়টি আর এগোয়নি।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের সচিব মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘মিঠু তার উদ্ভাবিত প্রযুক্তির বিষয়ে কথা বলেছেন। একবার দেখাও করে গেছেন। তার প্রযুক্তি কাজ করে কিনা পরীক্ষা করে দেখতে পশ্চিমাঞ্চল রেলের সিগন্যাল ও টেলিকমিউনিকেশন বিভাগে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

নাটোরের জেলা প্রশাসক মোহম্মদ শাহরিয়াজ বলেন, ‘চলমান পদ্ধতির চেয়ে যন্ত্রটি উন্নত প্রযুক্তি ও টেকসই হলে তার জন্য সব ধরনের সহায়তা করা হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর