বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
কলকাতার কথা ৫

শতবর্ষের আইকন হাওড়া ব্রিজ

মোস্তফা কাজল, কলকাতা থেকে ফিরে

শতবর্ষের আইকন হাওড়া ব্রিজ

শতবর্ষের দ্বারপ্রান্তে ভারতের কলকাতা শহরের অন্যতম আইকন হাওড়া ব্রিজ। বর্তমানে এ ব্রিজ কলকাতার প্রবেশদ্বার স্বরূপ। এ ব্রিজটি কলকাতা ও হাওড়া শহরকে যুক্ত করেছে। বিশ্বের ব্যস্ততম প্রসারিত খিলান সেতুর মধ্যে হাওড়া ব্রিজটি অন্যতম। এ ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬০ হাজার যানবাহন ও দুই লাখ পথচারী চলাচল করে। হাওড়া ব্রিজ কলকাতা মহানগরীর জীবনরেখা স্বরূপ। আবার অনেকে বলেন অর্থনীতির লাইফ লাইন। এ ব্রিজ কলকাতার হুগলি নদীর ওপর অবস্থিত তিনটি ব্রিজের মধ্যে একটি। তবে ক্যান্টিলিভার সমৃদ্ধ এ ব্রিজটি সহজে গড়ে ওঠেনি। হাওড়া ব্রিজ ৭০৫ মিটার দীর্ঘ এবং ৯৭ ফুট চওড়া। হাওড়া ব্রিজের কাঠামো ২৬ হাজার ৫০০ টনের ইস্পাত দিয়ে নির্মিত হয়েছে। এটি দুটি স্তম্ভদ্বারা সাহায্যপ্রাপ্ত। প্রতিটি স্তম্ভ সড়কের ঊর্ধ্বভাগে ৯০ মিটার জুড়ে অবস্থিত।

জানা গেছে, হাওড়া ব্রিজ তৈরির কাজে কোথাও ভুল হচ্ছিল। আবার তার সমাধানের পথও অনেক গবেষণার পর বের করা হয়। বিষয়টি জানার উৎসাহ অনেকের। ব্রিজটি তৈরি করতে কলকাতার শিল্পপতি রাজেন মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ছয়জনের বিশেষজ্ঞ কমিটি সমাধান দিয়েছিলেন।

 এ ছাড়া কারা এ ব্রিজের নকশা করেছিলেন কিংবা কোথা থেকে ইস্পাত সরবরাহ করা হয়েছিল এমন বিষয়গুলো জানার আগ্রহ অনেকের। হাওড়া সেতু নির্মাণ করতে সাত বছর সময় লেগেছিল। হাওড়ার এই প্রসারিত খিলান সেতুর কাজ সম্পন্ন হয় ১৯৪৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। এই সেতুর নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ২৫ লাখ টাকা। হাওড়া ব্রিজের পুরো কাঠামোটি রিভেট দ্বারা নির্মিত। যেখানে কোথাও নাট ও বোল্ট-এর ব্যবহার দেখতে পাওয়া যাবে না।

 এ ব্রিজের ওপর বর্তমানে অর্ধশত ভাসমান ব্যবসায়ী ব্যবসা করছেন। অনেকে এ ব্রিজকে প্রতিবাদের প্রতীক নামে অভিহিত করেছেন। কেননা পশ্চিম বঙ্গের যে কোনো আন্দোলন এ ব্রিজকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়। এ ব্রিজে দাঁড়িয়ে সড়ক বন্ধ করে রাজনৈতিক দল ও সংস্থা দাবি আদায়ের চেষ্টা করে। আবার অনেক সংগঠন ব্রিজের ওপর সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে। ফলে এ ব্রিজ এক মিনিটের জন্য বন্ধ হলে থমকে যায় গোটা কলকাতা শহর। কলকাতা সিটি ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা বাবু শিবরাম ঘোষাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কলকাতার প্রাণ হাওড়া ব্রিজ। এ ব্রিজ কলকাতার আশীর্বাদস্বরূপ। স্থানীয় ব্যবসায়ী হরিপদ নারায়ণ বলেন, অনেকে বিকাল বেলায় এ ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে গঙ্গা নদীর নান্দনিক দৃশ্য অবলোকন করেন। অনেকে ব্রিজের নিচে নৌকায় চড়ে অবসর কাটিয়ে থাকেন। কলকাতার বেশির ভাগ চলচ্চিত্র ও নাটকে এ ব্রিজের নানা অংশ দেখা যায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর