শনিবার, ৭ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

পানির সংকট, সরু সড়ক ও উৎসুক জনতার ভিড়

অগ্নি নির্বাপণে চ্যালেঞ্জ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের পঁাঁচলাইশ থানাধীন মির্জাপুল এলাকার হুমায়ুন কলোনি নামের একটি বস্তিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সরু সড়কের কারণে ঘটনাস্থলেই পৌঁছাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। ফলে দূর থেকেই পানি ছিটাতে হয়। গত ৩১ জানুয়ারি এ ঘটনা ঘটে। গত ২৪ জানুয়ারি একই এলাকার বাবুর কলোনি নামের বস্তিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায়ও পানির উৎস খুঁজতে সময় লাগে অন্তত ২০ মিনিট। সঙ্গে ছিল উৎসুক জনতার ভিড়। ফলে আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নগরে প্রতিটি অগ্নিকান্ডের ঘটনায় প্রধানত কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। এর মধ্যে অবধারিতভাবে থাকে পানির উৎস না থাকা, সড়ক ও গলি খুবই সরু হওয়া, উৎসুক জনতার অপ্রয়োজনীয় ভিড়, বিদ্যুতের এলোমেলো তার এবং ঘটনাস্থলে ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারে অতিমাত্রায়             তৎপরতা থাকা। মির্জাপুল এলাকার অগ্নিকান্ডের ঘটনার অভিজ্ঞতা বর্ণনা দিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নন্দন কানন স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ আবদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থলটিতে যাওয়ার পথটি অত্যন্ত সরু। ওই বস্তিতে যাওয়ার পথে একটি বহুতল ভবন থাকায় সেখানে পানির গাড়ি পৌঁছাতে পারছিল না। পরে আমাদের দূর থেকেই পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়েছে।’ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নন্দন কানন স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, ‘আগুন নেভানোর ক্ষেত্রে সরু সড়ক, পানি স্বল্পতা, উৎসুখ জনতা, বিদ্যুতের তারসহ নানা চ্যালেঞ্জের মুখে আমাদের পড়তে হয়। কারণ আমাদের গাড়িতে যে পানি থাকে তা ১০ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। তখন আমাদেরকে প্রাকৃতিক পানির উৎস খুঁজতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘অগ্নিনির্বাপণে ‘স্টোরেজ অব প্রিন্সিপাল’ বলে একটা কথা আছে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানের কোথায় কীভাবে এবং কতটুকু উচ্চতা পর্যন্ত পণ্য রাখা হবে তার একটা নিয়ম আছে। আমাদের এখানে স্টোরেজ অব প্রিন্সিপাল মানা হচ্ছে না। ফলে আগুন লাগার পর পরই দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ছে।’ 

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রাম বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে প্রতিনিয়তই বাড়ছে অগ্নিদুর্ঘটনা। চট্টগ্রাম বিভাগে ২০১৮ সালে অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটেছে এক হাজার ৩৭০টি এবং ২০১৯ সালে ঘটেছে এক হাজার ৯১৮টি। ২০১৮ সালে অগ্নি দুর্ঘটনায় মারা যান ৬ জন এবং ২০১৯ সালে মারা যান পাঁচগুণের বেশি, ৩৩ জন। ২০১৮ সালে অগ্নি দুর্ঘটনায় আহত হন ২৭ জন এবং ২০১৯ সালে আহত হন ৫১ জন। ২০১৮ সালে আনুমানিক ক্ষতি হয়েছে ৫ কোটি ৮৫ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং আনুমানিক উদ্ধার করা হয়েছে ১৪ কোটি ২৯ লাখ ৩০ হাজার টাকার মালামাল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর