বুধবার, ১৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
ওবায়দুল কাদেরের বিবৃতি

গণমাধ্যম সত্য প্রচারে শঙ্কিত নয়, নির্ভীক

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের গণমাধ্যম সত্য প্রচারে শঙ্কিত নয় বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, গণমাধ্যম হলো চলমান সমাজের দর্পণ। তারা সত্য প্রচারে নির্ভীক। গণমাধ্যম নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিকেলে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গণমাধ্যম সত্য প্রচারে শঙ্কিত’। কিন্তু দেশবাসি লক্ষ্য করেছে, গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন আন্দোলনে সরকারবিরোধী প্রচারণায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সকল ক্ষেত্রে বিএনপি কীভাবে গুজব ছড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অপচেষ্টা চালিয়েছে। তারা গুজবভিত্তিক রাজনীতির বৈধতা দিয়েছে।

সেই কারণে সংকটময় এই সময়ে জনগণের পাশে না দাঁড়ানো বিএনপির মিডিয়াবাজির রাজনীতিতেও ভাটা পড়ায় তারা গণমাধ্যমকে ঢাল হিসেবে ব্যবহারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কর্মভীরু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে বাক্যালাপে বীরত্ব প্রদর্শন করছেন।

করোনা সঙ্কটে গণমাধ্যম কর্মীদের দায়িত্বশীলতার প্রশংসা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের আগ্রাসী তা-বে সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও প্রতিদিনের যাপিত জীবন পতিত হয়েছে এক অবর্ণনীয় সঙ্কটে। জীবনের পাশাপাশি জীবিকা এবং স্বাস্থ্যের ঝুঁকিও চরম পর্যায়ে। করোনায় সৃষ্ট সংকটে সাংবাদিক বন্ধুগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করে চলেছেন। প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সংবাদকর্মীরা সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে অগ্রগণ্য। এসময় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক।

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পর পর সদ্য স্বাধীন দেশে দেশবিরোধী নানা অপতৎপরতা শুরু হয়। দেশের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ না থেকে বিদেশের টাকায় রাতারাতি সংবাদপত্র প্রকাশ করে জাতীয় বিভাজন ও সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করা হয়। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প থেকে জাতিকে রক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান হয়ে সাম্যভিত্তিক সমাজ নির্মাণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘গণতন্ত্র’ প্রত্যয়টির চেয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির উপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি জানতেন, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি কায়েম না হলে গণতন্ত্র টেকসই হবে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাকশাল ছিল সেই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রা এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নিজেই বাকশালের কার্যকরী সদস্য ছিলেন। বাকশাল কোনও একদলীয় ব্যবস্থা ছিল না। এটি ছিল সকল মত ও শ্রেণী-পেশার সমন্বয়ে একটি জাতীয় দল। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করেছেন, বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ৪টি পত্রিকা ব্যতীত সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়া হয়। তার জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই, তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় দৈনিক, সাপ্তাহিক ও অন্যান্য মিলে ১২৬টির মতো সংবাদপত্র প্রকাশিত হতো। জাতির পিতা সংবাদপত্র জগতে বস্তুনিষ্ঠতা ও দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠার জন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে গঠিত কমিটির সুপারিশে একটি কাঠামো দাঁড় করিয়েছিলেন মাত্র।

বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কথায় কথায় বিএনপি নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন দেশে গণতন্ত্র নেই। দেশে যদি গণতন্ত্র না-ই থাকে তাহলে বিএনপির নেতৃবৃন্দ কীভাবে সরকারের বিরুদ্ধে এত মিথ্যাচার করার সুযোগ পান? বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে ৯৯ শতাংশ ভোট ডাকাতির কথা দেশবাসি জানে। সামরিক শাসনতন্ত্রের মোড়কে ১৯৭৯ সালের গণতান্ত্রিক নির্বাচনও দেশবাসি প্রত্যক্ষ করেছিল। সেই ইতিহাস এখনও বই-পুস্তক ও জাতীয় স্মৃতিতে জ¦ল-জ¦লায়মান। সুতরাং বিএনপির মুখে আর যা-ই হোক গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পরে অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সফল নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের করোনা সংকট জয়ের লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের আহ্বান জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর