মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
কালের কণ্ঠ-স্বাস্থ্য অধিদফতর ও ইউএসএইডের গোলটেবিল

অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বিপদ বয়ে আনবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

কভিড-১৯ আক্রান্ত বা আক্রান্ত সন্দেহে দেশে যেভাবে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার ঘটছে তা আমাদের ভয়াবহ বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারে। অনেকেরই অন্য রোগে আক্রান্ত হলে তখন প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়েটিক তার শরীরে কার্যকর হবে না। গতকাল কালের কণ্ঠ-স্বাস্থ্য অধিদফতর ও ইউএসএইড আয়োজিত এক যৌথ গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা এ মত প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি বলেন, ওষুধের মানের ব্যাপারে কোনো আপস নেই। নিম্নমানের, নকল, ভেজাল, অবৈধ ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতের বিরুদ্ধে অভিযান এবং বিধিগত ব্যবস্থা চলমান থাকবে। অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার মানুষকে বিপদগ্রস্ত করছে। ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এ গোলটেবিল আলোচনার সঞ্চালনা করেন কালের কণ্ঠ সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন। তিনি বলেন, আমাদের আলোর পথ খুঁজতে হবে, লড়াই করতে হবে। নিজেদের সুরক্ষার জন্য বাঁচতে হবে নিরাপদভাবে। সতর্কতার মাধ্যমেই এটা সম্ভব হবে। অর্থাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যাবে না। ওয়ান হেলথ কার্যক্রমের বাংলাদেশে সমন্বয়কারী ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স হাসপাতালের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিতীশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, জনস্বাস্থ্য ও প্রাণী স্বাস্থ্য-উভয় ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বিপদ ডেকে আনছে। এ অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে আমাদের ওয়ান হেলথ কনসেপ্টকে কার্যকর করতে হবে। মূল প্রবন্ধে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ ফয়েজ বলেন, কেবল মানুষ যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করছে তাই নয়, আমাদের মাটি, পানি ও প্রাণিসম্পদও নানাভাবে অ্যান্টিবায়োটিকের দূষণে বিষাক্ত হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকার বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই প্রাণিসম্পদে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার হয়ে থাকে। আমরা তা আগের চেয়ে কমিয়ে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ ফার্মাকোলজি সোসাইটির সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, লাখ লাখ মানুষ কভিড থেকে মুক্তির আশায় যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক খেয়েছে। ওই মানুষগুলোর শরীরে এর প্রতিক্রিয়া ভবিষ্যতে কি হবে-না হবে তা বড়ই আশঙ্কার বিষয়। গোলটেবিলের সহআয়োজক হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য। তবে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে আমাদের হাতে শেষ রক্ষা বলে কিছু থাকছে না। তিনি বলেন, ইউএসএইড বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ অন্যদের নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার প্রতিরোধ ও এ থেকে মানুষকে সুরক্ষা দিতে বিভিন্ন সহায়ক উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এএমআর কার্যক্রমের ফোকাল ডা. রামজি ইসমাইল, ইউএসএইডের এমটিএপিএস কার্যক্রমের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. জেবুন্নেসা রহমান, ইউএসএইডের গ্লোবাল হেলথ সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট ডা. আবুল কালাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিডিসির উপ-কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ডা. অনিন্দ্য রহমান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর