একটি রঙিন আম জাতীয় বীজ বোর্ড থেকে নিবন্ধন পেয়েছে। একই সঙ্গে নিবন্ধন পেয়েছে অপ্রচলিত দেশি ফল ফলসা। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র জাত দুটির নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। এর আগে দীর্ঘ সময় ধরে ফল দুটিকে নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। নতুন এই ফলসা এবং রঙিন আম সারা দেশে চাষ করা সম্ভব। ৩১ ডিসেম্বর কৃষি মন্ত্রণালয়ের বীজ অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও জাতীয় বীজ বোর্ডের সচিব নতুন এই আম ও ফলসার নিবন্ধন দেন। রবিবার নিবন্ধনপত্র রাজশাহী আসে। দেশে এই প্রথম ফলসা ফল নিবন্ধন পেল। এটি নাম পেয়েছে ‘বারি ফলসা-১’। আর রঙিন আমটির নাম হয়েছে ‘বারি আম-১৪’। তবে রঙিন আম এর আগেও নিবন্ধন পেয়েছে। নতুন নিবন্ধন পাওয়া জাতটি এসেছিল সৌদি আরব থেকে। আর ফলসাটি ছিল রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রেই। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফল গবেষণা কেন্দ্রের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গোলাম মর্তুজা ‘লিয়েনে’ সৌদি আরব গিয়েছিলেন।
সেখানে তিনি আমবাগান নিয়ে গবেষণার কাজ করতেন। ২০১০ সালে ‘টমিএটকিনস’ জাতের আম গাছের সায়ন (ডাল) সংগ্রহ করে আনেন। তিনি সেটি রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রে দেন। এরপর ১০টি গাছে তার কলম করা হয়। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দীন জানান, প্রথমে ১০টি গাছে কলম করা হলেও ৯টি গাছই মরে যায়। অতিযতেœ কেবল একটি গাছকে বাঁচিয়ে রাখা যায়। সেখান থেকে চারটি মাতৃগাছ করা হয়েছে। ১০ বছর ধরে গবেষণায় প্রায় প্রতি বছরই গাছে রঙিন আম পাওয়া গেছে। আমটি জুলাই মাসের শেষে পাকে। আমের গড় ওজন প্রায় ৫৫০ গ্রাম। আমটি লম্বায় ১০ দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার ও প্রস্থ ৮ দশমিক ৪৯ সেন্টিমিটার। নিবন্ধন পাওয়া জাতটির ধরন ‘ইনব্রিড’। অন্যদিকে রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রে প্রায় ২০ বছর বয়সী একটি ফলসা ফলের গাছ আছে। আকারে ছোট টক-মিষ্টি স্বাদের এই ফলটি শিশুরা খুবই পছন্দ করে। ফলটি ভিটামিন আর মিনারেলে ভরপুর। ১০ বছর ধরে এই ফলটিরও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। নিবন্ধন পাওয়া ফলসাও ‘ইনব্রিড’। বছরের মে-জুন মাসে এটি পেকে খাবার উপযোগী হয়। ফল হয় ৫ থেকে ১২ মিলিমিটার ব্যাসবিশিষ্ট। ড. আলীম উদ্দীন জানান, আম ও ফলসার নিবন্ধন পাওয়ায় তারা এখন যত বেশি সম্ভব চারা উৎপাদন করবেন। তারপর সরকারি নার্সারিগুলোতে দেবেন। এ ছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন নার্সারিতেও দু-একটি করে দেওয়া হবে, যেন জাতটি ছড়িয়ে পড়ে।
