বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দায়ের ২০টি মামলার তদন্ত আড়াই মাসের মধ্যে শেষ করে চার্জশিট দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। ইকবাল হোসেন ভূইয়া নামে এক আসামির জামিন শুনানির সময় আদালত এ আদেশ দেয়। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলা দায়েরের সাড়ে ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো চার্জশিট দাখিল করেনি দুদক।
তাই আদালত এ আদেশ দিয়েছে বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী মোমতাজ মৌ।
২০১৩ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘বেসিক ব্যাংকের তিনটি শাখার নানা অনিয়ম’ শিরোনামে খবর প্রকাশ হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মাত্র দুই বছরে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকের তিনটি শাখা ৪ হাজার ২৪৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে। এই ঋণের বড় অংশই দেওয়া হয়েছে কোনো নিয়মকানুন না মেনে। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে বেসিক ব্যাংক।
শাখাগুলোর মধ্যে গুলশান শাখার দেওয়া ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৮০০ কোটি ২৩ লাখ টাকা, শান্তিনগর শাখা ১ হাজার ৫২৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং দিলকুশা শাখা দিয়েছে ৯২৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। এই তিন শাখায় অতি দ্রুততায় ঋণ ছাড় করা হয়। ঋণের বিপরীতে কোনো উল্লেখযোগ্য জামানতও রাখেনি কর্তৃপক্ষ। বরং তালিকার বাইরের নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে এসব জামানতের অভিহিত মূল্য (ফেস ভ্যালু) বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে, যাতে বেশি করে ঋণ পাওয়া যায়।
ব্যবস্থা নিতে এই তিন শাখার নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের বিস্তারিত প্রতিবেদন দুদকের কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ব্যাংকটির উপর বিস্তারিত পরিদর্শন চালায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ এবং পরে অর্থ আদায়ে উদাসীনতার কারণে ব্যাংকের প্রায় কয়েক হাজার কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির সঙ্গে সরাসরি বেসিক ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জড়িত। এসব ঋণ নিয়ে তারা সদ্ব্যবহার করেনি বলেও প্রমাণ পেয়েছে পরিদর্শক দল।
