শনিবার, ৫ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

সিলেটে ভেঙে ফেলা হবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে ভেঙে ফেলা হবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন

সিলেটে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচবার ভূমিকম্পের আতঙ্ক এখনো কাটেনি। বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা অনুযায়ী বড় রকমের ভূমিকম্পের আতঙ্কে রয়েছেন সিলেটবাসী। এই আতঙ্কে নতুনমাত্রা যোগ করেছে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। এসব ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সিটি করপোরেশন। সংস্কারের মাধ্যমে যেসব ভবন ঝুঁকিমুক্ত করা যাবে না, সেগুলো ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত  নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। আগের চিহ্নিত ২৩টি ছাড়া নতুন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন খুঁজে বের করতে করপোরেশনের পক্ষ থেকে চারটি বিশেষ টিমও গঠন করা হয়েছে।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ভবন মালিকদের অনেকবার নোটিস দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তারা ভবনগুলো ভাঙেননি। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো এখন নগরবাসীর কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করপোরেশনের তালিকাভুক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে রয়েছে- জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উত্তর পাশের কালেক্টরেট ভবন-৩, জেলরোডস্থ সমবায় ব্যাংক ভবন, একই এলাকায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাবেক কার্যালয় ভবন, সুরমা মার্কেট, বন্দরবাজারস্থ সিটি সুপার মার্কেট, জিন্দাবাজারের মিতালী ম্যানশন, দরগাগেইটের হোটেল আজমীর, বন্দরবাজারের মধুবন সুপার মার্কেট, টিলাগড় কালাশীলের মান্নান ভিউ, শেখঘাট শুভেচ্ছা-২২৬ নম্বর ভবন, যতরপুরের নবপুষ্প ২৬/এ বাসা, চৌকিদেখির ৫১/৩ সরকার ভবন, জিন্দাবাজারের রাজা ম্যানশন, পুরান লেনের ৪/এ কিবরিয়া লজ, খারপাড়ার মিতালী-৭৪, মির্জাজাঙ্গাল মেঘনা এ-৩৯/২, পাঠানটুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর বাগবাড়ির একতা ৩৭৭/৭ ওয়ারিছ মঞ্জিল, একই এলাকার একতা ৩৭৭/৮ হোসেইন মঞ্জিল, একতা-৩৭৭/৯ শাহনাজ রিয়াজ ভিলা, বনকলাপাড়া নূরানী-১৪, ধোপাদিঘীর দক্ষিণ পাড়ের পৌরবিপণি মার্কেট ও ধোপাদিঘীরপাড়ের পৌর শপিং সেন্টার।

এই তালিকার বাইরে নগরীর চৌকিদেখির সিলসিলা গলির সরকার ভবন নামের একটি তিনতলা ভবন রয়েছে। ভবনটিতে বাস করে ১০টি পরিবার। ভূমিকম্পের পর থেকে পুরনো জীর্ণ এই ভবন এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম জানান, কোন ধরনের অনুমতি ছাড়াই এ ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। ভবনের নকশাও অনুমোদিত নয়। তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনটি নিয়ে আশপাশের লোকজনও চিন্তিত। প্রায় তিন দশক আগে নির্মিত ভবনটির কোনো অনুমোদন নেই। ভবনের মালিককে কয়েক দফা ডাকা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তাই জানমালের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ভবনটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবন প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা সিলেট। ভূমিকম্পের রেড জোনে রয়েছে এ অঞ্চল। তাই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। যেসব ভবন ইতিমধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বিশেষজ্ঞ দিয়ে সেসব ভবন পরীক্ষা করা হবে। বিশেষজ্ঞরা সংস্কারের মাধ্যমেও ভবনগুলো ঝুঁকিমুক্ত করা যাবে না- এমন মতামত দিলে সংশ্লিষ্ট ভবনগুলো ভেঙে ফেলা হবে। সিটি করপোরেশনের অনুমোদন ছাড়া বা ঝুঁকিপূর্ণ পুরনো ভবন চিহ্নিত করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর