স্বপ্নের বুননে ওরা পাড়ি দিয়েছে ৩০ বছর। তিন দশকে ওদের ঝুলিতে অর্জনও কম নয়। দীর্ঘ এই পথচলায় প্রত্যেকেই সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নিজ নিজ ক্ষেত্রে দীপ্তিমান। আর ওদের উত্তরসূরিরা মাত্র পথচলা শুরু করেছে। কুঁড়ি থেকে ওরাও এক দিন প্রস্ফুটিত হবে। ছড়িয়ে পড়বে সংস্কৃতির নানা আঙ্গিনায়। ওদের সবারই ঠিকানা ‘আমরা কুঁড়ি’। নিজেদের ঠিকানাকে বর্ণাঢ্য করে তুলতে ৩০ বছরের পথচলায় নতুন ও পুরান সবাই মিশেছে একই মোহনায়। তিন দশকের এই পথচলাকে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে জমকালো মিলনমেলায় এক কাতারে দাঁড়িয়েছে ‘আমরা কুঁড়ি’র অগ্রজ ও অনুজরা। হেমন্তের গোধূলিলগ্নে ওরা সবাই মিশেছে একই কুঁড়িতে। গতকাল বিকালে এমন চিত্রই ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আমরা কুঁড়ি’র তিন দশক পূর্তির দুই দিনের আয়োজনের প্রথম দিনে। ‘স্বপ্ন গড়ার স্বপ্নপুরি, তিন দশকে আমরা কুঁড়ি’ স্লোগানে ছুটির দিনের পড়ন্ত বিকালে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে রং-বেরঙের বেলুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন সংগঠনের সদস্যরা। এরপর বিভিন্ন পোস্টার ও ফেস্টুন নিয়ে বাহারি পোশাকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে সংগঠনটি। এতে একাকার হয়ে যায় খুদে শিল্পী ও পরিণত শিল্পীরা। একাডেমির নন্দমঞ্চের পূর্ব পাশ থেকে শুরু করে সমগ্র শিল্পকলা একাডেমি প্রদক্ষিণ করে শোভাযাত্রাটি সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনের সামনে এসে শেষ হয়।
উদ্বোধন ও শোভাযাত্রা শেষে সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় দুই দিনের আয়োজনের প্রথম দিনের অনুষ্ঠানমালা। এ দিনের আয়োজনের প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শামীম বানু শান্তি, বাংলা একাডেমির সচিব লোকমান হোসেন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুছ আফ্রাদ। উৎসব কমিটির আহ্বায়ক ও আমরা কুঁড়ির উপদেষ্টা শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান মুশতাক আহম্মদ লিটন। আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গত ৩০ বছরের পথচলার সারথিদের সম্মাননা প্রদানের মধ্য দিয়ে সাজানো ছিল প্রথম দিনের আয়োজন। আজ শনিবার একই মিলনায়তনে শেষ হবে দুই দিনের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। পুনর্মিলনী, আড্ডা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে সাজানো থাকবে সমাপনী দিনের অনুষ্ঠান।
সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পথনাটক : সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টার প্রতিবাদে ‘সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ ও সম্প্রীতি রক্ষায় পথনাটক’ শীর্ষক আলোচনা ও পথনাটকের আয়োজন করে পথনাটক পরিষদ।
গতকাল বিকালে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার লবিতে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে বক্তৃতা করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামন নূর, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজিদ, অভিনেতা ঝুনা চৌধুরী, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহাকাম উল্লাহ, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মেদ গিয়াস প্রমুখ। এতে সভাপতিত্ব করেন পথনাটক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান।
আলোচনা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে পথনাটক ‘তিমির বিনাশী কাল’, মেঘদূত নাট্যসম্প্রদায় পরিবেশন করে পথনাটক ‘মানুষ’।