শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

কদর কমেনি সিল্কের

রাজশাহীর : ঈদবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

কদর কমেনি সিল্কের

দুপুর ১২টা। রাজশাহীর ঊষা সিল্কের বিক্রয়কেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড়। গতকাল নগরীর ভদ্রা এলাকা থেকে এসে এখান থেকে মেয়ের জন্য থ্র্রিপিস কেনেন আকতার হোসেন। তিনি বলেন, সিল্কের সঙ্গে অন্য কিছুর তুলনা হয় না। এর আলাদা একটা ঐতিহ্য আছে। রাজশাহীতে এবারও ঈদ কেনাকাটায় পছন্দের শীর্ষে আছে সিল্কের পোশাক। শাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিক্রি হচ্ছে সিল্কের থ্রিপিস ও পাঞ্জাবি। রোজার শেষ সময়ে এসে রাজশাহীতে সিল্কের বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে ভিড়। রাজশাহীর বাইরে থেকেও ক্রেতারা আসছেন। গতকাল নগরীর বিসিক এলাকার সপুরা সিল্ক মিলস লিমিটেডের বিক্রয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতাদের ভিড়। সপুরা সিল্কের শোরুমে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছিলেন গৃহবধূ শবনম মোস্তারি। তিনি বলেন, তার ও তার শাশুড়ির জন্য সিল্কের শাড়ি এবং স্বামীর জন্য সিল্কের পাঞ্জাবি কিনতে এসেছেন। একই ছাদের নিচে আছে সন্তানের পোশাকও। রাজশাহী সিল্ক দেশজুড়ে সমৃদ্ধ। তাই ঈদে তার পরিবারের পছন্দে রেশমী পোশাকের কদরই বেশি বলে জানান শবনম।

স্ত্রীর জন্য মসলিন সিল্কের শাড়ি কিনলেন রাজশাহীর স্কুলশিক্ষক ফয়সাল আরেফিন। তিনি বলেন, এ শাড়ি যেমন হালকা, তেমনি এর কাজগুলো ব্যতিক্রমী। হাতে কাজ করা বলে একটি শাড়ির কাজের সঙ্গে আরেকটি শাড়ির কাজের মিল নেই। প্রতিটি শাড়ির একটা নিজস্বতা আছে। সপুরা সিল্ক মিলসের ব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান বলেন, এক যুগ আগে তারা মসলিন সিল্কের আদলে সিল্কের থান ও শাড়ি তৈরি শুরু করেন। একটি মসলিন থানের ওজন ১০০ থেকে ১৩০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। থান কাপড়ের ওপরে স্থানীয় বুটিক হাউসগুলো কাজ করার জন্য প্রস্তাব দেয়।

আস্তে আস্তে রাজশাহী থেকে ঢাকার অনেক বুটিক হাউসও এ কাজ শুরু করে। মসলিন সিল্কের প্রতিটি শাড়ি ১০ হাজার ৫০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এবারের ঈদে এর চাহিদা বেশি।

রেশমের তৈরি কাপড় সারা বছর বিক্রি হলেও ঈদে তার কদর বেড়ে যায় দ্বিগুণ। ঐতিহ্যের পরম্পরায় তাই রেশম ও রাজশাহী দুটি নামই বহন করছে একে অন্যের পরিচিতি। রাজশাহীর মানুষের ঈদ আর সিল্ক যেন তাই একই সুতোয় গাঁথা। রেশমের পোশাক ছাড়া যেন ঈদের খুশিই মলিন হয়ে যায়। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সবার সামনে হাজির করছে নিত্যনতুন রেশমী পোশাক। নানান রঙের থ্রিপিস, রেশমী শাড়ি অথবা পাঞ্জাবি। ঈদে তাই রাজশাহীর মানুষের শরীরে রেশমের শুভ্রতা লাগবেই। রেশমের প্রতি নারীদের বিশেষ টান যেমন নতুন কিছু নয়, তেমনি এমন অনেক পুরুষও আছেন ঈদে যাদের সিল্কের পাঞ্জাবি লাগবেই। এ জন্য নতুন নতুন চটকদার ভিন দেশি সব নাম আর দামের পোশাকের ভিড়ে রেশমের অভিজাত্য এতটুকুও হারায়নি। এখনো রাজশাহীর মানুষ রেশম ছাড়া উৎসবের কথা ভাবতে পারেন না।

ঊষা সিল্কের পরামর্শক লুৎফর রহমান বলেন, তাদের সফট সিল্ক ও মসলিন সিল্কের শাড়ি বেশি বিক্রি হচ্ছে। কাতান ও সফট সিল্কের শাড়ি এবং পাঞ্জাবির চাহিদাও বেশি। নানা নামে, রঙে পোশাকের বাহার থাকলেও সিল্কের কদর এখনো জোরালোভাবেই আছে বলে জানান তিনি।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর