বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডিতে আরও দুজনের মৃত্যু

তৈরি পোশাকের অনুমোদনে রাসায়নিক রাখত বিএম ডিপো

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

পোলট্রি ফিড ও তৈরি পোশাক রাখার অনুমোদন নিয়ে বিএম কনটেইনার ডিপোয় রাখা হতো রাসায়নিক পদার্থ। ওই ডিপোয় আগুন লাগা ও ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণ ঘটার পর তা নজরে আসে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদফতরের। এরই মধ্যে বিএম কনটেইনার ডিপো পরিদর্শন করে রাসায়নিক পদার্থ রাখার সত্যতা পাওয়া প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদফতর।

পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম জেলার উপপরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, ‘রাসায়নিক পদার্থ রাখার অনুমতি ছিল না বিএম কনটেইনার ডিপোর। তাদের ভোগ্যপণ্য, তৈরি পোশাক ও পোলট্রি ফিড রাখার অনুমতি ছিল। তারা নিয়মবহির্ভূতভাবে রাসায়নিক রেখেছেন। তথ্য গোপন করে রাসায়নিক পদার্থ রাখায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বছরে একবার কনটেইনার ডিপো পরিদর্শন করা হয়। সর্বশেষ পরিদর্শনকালে ডিপোয় রাসায়নিকের কোনো কনটেইনার ছিল না। পরিদর্শনের পর হয় তো রাসায়নিক মজুদ করেছে।’ জানা যায়, বিএম কনটেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষ কেবল কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের আবেদন করে পরিবেশ ছাড়পত্র নেন। যাতে রাসায়নিক কিংবা বিপজ্জনক কোনো পদার্থ রাখার অনুমতি ছিল না। কিন্তু আগুন লাগা ও বিস্ফোরণের পর দেখা গেছে ওই ডিপোয় ২৮টি কনটেইনারে রাসায়নিক ছিল। যার মধ্যে ১৫টির বিস্ফোরণ হয়েছে। বিস্ফোরণের পর ওই এলাকার পানি ও বাতাসের মান পরীক্ষা করেছে পরিবেশ অধিদফতর। যাতে পানির মান সঠিক পাওয়া যায়নি। বাতাসের মানের পরীক্ষা হাতে আসেনি। প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে বিএম কনটেইনার ডিপোয় আগুন লাগে ও ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে নিহত হন ৪৪ জন। আহত হয়েছেন ৩ শতাধিক ব্যক্তি। আহতরা ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আরও দুজনের মৃত্যু : চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হওয়া মাসুদ রানা (৩৭) নামের আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটের সময় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সন্ধ্যা ডিপো থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ নিয়ে সীতাকুন্ড ট্র্যাজেডিতে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়। মাসুদ রানা বিএম কনটেইনার ডিপোর আরএসটি অপারেটর ছিলেন। তার বাড়ি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ীর ভাটার গোপীনাথপুরে।

 তার বাবার নাম খলিলুর রহমান এবং মায়ের নাম জমিলা বেগম।

চমেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হারুনুর রশিদ বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় মাসুদ রানাকে আইসিইউতে আনা হয়েছিল। শুরু থেকে তার অবস্থা খারাপ ছিল। মঙ্গলবার গভীর রাতে তিনি মারা যান।

প্রসঙ্গত, সীতাকুন্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর এলাকার বিএম কনটেইনারে গত শনিবার বিস্ফোরণের ঘটনায় ৪৫ জন নিহত এবং তিন শতাধিক আহত হন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর