মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
জলাবদ্ধতা নিরসন

২১ খাল নিয়ে বিপাকে চসিক

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মহানগরে খাল ছিল ৭১টি। সিটি করপোরেশনের (চসিক) কাছে খাল আছে ৫৭টি। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের অধীনে সংস্কার-উন্নয়ন করছে ৩৬টি। কিন্তু বাকি ২১টি খাল হয়ে পড়ে অনেকটা অভিভাবকহীন। চসিকের এসব খাল নিয়মিত পরিষ্কার করার কথা। কিন্তু জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের অজুহাতে কাজটি করেনি। ফলে এ বছর বর্ষার আগেই তিন দফা এবং বর্ষার শুরুতেই টানা তিন-চার দিন পানির নিচে তলিয়ে থাকে নগর। ২১ খাল নিয়ে বিপাকে চসিক। তবে এসব খাল নিয়ে তারা নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে জানা যায়। জানা যায়, মেগা প্রকল্পের বাইরে থাকা ২১ খালের মধ্যে অনেকটি এখন ভরাট, বেদখল। খাল দখল করে স্থাপনা তৈরি হয়ে গেছে। অনেকটির অবস্থা শোচনীয়, অনেক খাল এখন অস্তিত্বহীন। অনেক ৩০ ফুট প্রস্থের খাল এখন ৬ ফুটে ঠেকেছে। ফলে এসব খাল উদ্ধারে দরকার দীর্ঘমেয়াদি টেকসই মহাপরিকল্পনা। বর্তমানে জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ ৩৬টি খাল উদ্ধার, সংস্কারসহ ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। চসিকের মেয়র মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘মহানগরের ২১টি খাল উদ্ধার ও সংস্কারে দরকার পৃথক প্রকল্প। ২১টি খালের উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধারে ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য কনসালট্যান্ট নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন। এগুলো উদ্ধার ও ভূমি অধিগ্রহণে অনেক টাকার দরকার। ফিজিবিলিটি স্টাডি হলে সরকারের কাছ থেকে প্রকল্প নেব। কারণ বর্তমানে যে ৩৬টি খালের উন্নয়নকাজ চলছে তার অনেকটির পানি এ ২১ খালে পড়ে। এগুলো উদ্ধার না হলে জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের সুফল শতভাগ মিলবে না।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বঙ্গোপসাগর, কর্ণফুলী ও হালদা নদী ঘিরে চট্টগ্রাম মহানগরের অবস্থান। ভৌগোলিকভাবে সাগর-নদী বেষ্টিত হওয়ায় পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না। পক্ষান্তরে মহানগরের অভ্যন্তরে কটি খাল আছে তার সঠিক সংখ্যা নেই কোনো সংস্থার কাছে। চসিকের কাছে ৫৭টি খালের তথ্য আছে। এর মধ্যে বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত খাল ১৩টি, কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ৩৩টি ও হালদা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ১০টি। তবে অতীতে চট্টগ্রাম নগরে ছোট-বড় মিলে ১৮২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ১১৮টি খাল থাকার রেকর্ড রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত অর্ধশত খাল অস্তিত্বহীন। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম নগর থেকে পানি সরাসরি প্রবাহিত হয়ে কর্ণফুলী নদীতে পড়ে মূলত ১০টি খাল দিয়ে। এগুলো হলো- চাক্তাই খাল, রাজা খাল, বিবি মরিয়ম খাল, কলাবাগিচা খাল, ফিরিঙ্গি বাজার খাল, বাকলিয়া খাল, মহেশ খাল, বোট ক্লাব খাল ও ডোমখালী খাল। কিন্তু এসব খালের অধিকাংশ স্থান দখল-ভরাটের কবলে। মেগা প্রকল্পের অধীনে খাল উদ্ধার ও সংস্কার কাজ এখন চলমান।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর