শিরোনাম
শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ে, কাজ শেষ হয় না

সিডিএর ১৪১৭৭ কোটি টাকার তিন প্রকল্প

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ে, কাজ শেষ হয় না

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তিনটি প্রকল্পেরই মেয়াদ বৃদ্ধির সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ানো হয়েছে। যথাসময়ে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় নগরবাসীকে অন্তহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।  

সিডিএ সূত্রে জানা যায়, ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি মেগা প্রকল্প সিডিএ বাস্তবায়ন করছে। জানা যায়, জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পটি ২০১৭ সালে শুরু হয়। ২০২০ সালের জুনে এটা শেষ হওয়ার কথা ছিল। দুই দফা বাড়িয়ে প্রকল্প শেষের সময় নির্ধারণ করা হয় ২০২২ সালের জুন। এ সময়ে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। পরে এ প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ১০ হাজার ৪২০ কোটি টাকা নির্ধারণ করে সংশোধিত ডিপিপি জমা দেয় সিডিএ। কিন্তু গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রকল্প ব্যয় ৯ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা নির্ধারণ করে। তবে সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। একই সঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়।

প্রকল্প-সংক্রান্ত সংশোধিত নথিপত্রে উল্লেখ করা হয়, প্রতিরোধ দেয়াল, নালা নির্মাণ, ব্রিজ-কালভার্ট, টাইডাল রেগুলেটর (জোয়ার প্রতিরোধক ফটক), সিল্টট্র্যাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নকশায় গলদ রয়েছে। চট্টগ্রামের পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে মূল ডিপিপিতে নির্ধারিত নকশার বেশ পরিবর্তন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ কারণে নির্মাণ ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরীর যানজট নিরসনে বায়েজিদ বোস্তামি থেকে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক প্রকল্পটি ২০১৫ সালে শুরু হয়। ২০১৯ সালে এটা শেষ হওয়ার কথা ছিল। তখন ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২০ কোটি টাকা। কিন্তু পরে সংশোধন, পরিবর্ধন করে বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয়। এখন প্রকল্পের ব্যয় ৩৫২ কোটি টাকা এবং কাজের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত।  প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এটি চালুর পর ওই সড়কে গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। ফলে দুই লেন থেকে প্রকল্পটিকে চার লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়। তাছাড়া ডিজাইনে পরিবর্তন ও কাজের পরিধিও বেড়ে যায়। ফলে প্রকল্পের সময় ও ব্যয় দুটি বেড়েছে বলে জানা যায়।

এ ছাড়া, ‘চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ-আমানত বিমান বন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ’ শীর্ষক ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকার প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুলাই শুরু হয়। ২০২০ সালের জুনে এটি শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু এখন প্রকল্পটির ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা হয়েছে। এর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, একটি প্রকল্প বাস্তবায়নকালে নানা সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। নকশা পরিবর্তন, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা, অর্থ সংকট, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিসহ নানা প্রেক্ষাপট সামনে আসে। এসব কারণে কাজ কখনো বন্ধ থাকে, কখনো গতি কমে যায়। ফলে কাজের মেয়াদ এবং ব্যয় দুটিই বাড়ে। এটি বাস্তবতা। তাছাড়া, একটি প্রকল্প শুরুর পর নতুন অনেক কিছু যুক্ত করতে হয়। ব্যয় বৃদ্ধির এটিও একটি কারণ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর