রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ওরা ডিবি-সিআইডি পরিচয়ে ডাকাতি ছিনতাই করত

ছয়জন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘ডাকাতি করার জন্য বিভিন্ন দলে বিভক্ত হতো তারা। এরপর ডিবি পুলিশ, সিআইডি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকসহ আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান নিয়ে ব্যবসায়ীসহ আর্থিক লেনদেনকারীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করত। পথিমধ্যে যেসব জায়গায় সিসি ক্যামেরা নেই, এরকম নিরিবিলি জায়গায় সুযোগ বুঝে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ভিকটিমদের গতিরোধ করত। ভিকটিমদের নামে মামলা কিংবা ওয়ারেন্ট আছে বলে টাকার ব্যাগসহ গাড়িতে তুলে নিত। এরপর টাকা, মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে সুবিধামতো জায়গায় ফেলে পালিয়ে যেতো।’

ডাকাত চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতারের পর তাদের ডাকাতি করার কৌশল নিয়ে এমনটি জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবি জানায়, ডাকাতির আগে ঘটনাস্থল রেকি করত চক্রটি। রেকির কাজে মোটরসাইকেল আর ভিকটিমকে গতিরোধ করে ডাকাতি করার কাজে ব্যবহার করত মাইক্রোবাস। গ্রেফতারকৃতরা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ১৩ নভেম্বর ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ব্যবসায়ী কেরামত আলীর কাছ থেকে ৮৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার ছায়া তদন্ত করতে গিয়ে গ্রেফতার ছয়জনের সম্পৃক্ততা পায় ডিবি। পরে শুক্রবার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি লালবাগ বিভাগ। তারা হলেন সোহাগ মাঝি, মো. দেলোয়ার, জয়নাল হোসেন, মো. সোহেল, মো. জনি ও মো. আজিজ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা, ওয়ারলেস ও খেলনা পিস্তল জব্দ করা হয়। এ ছাড়া ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, ১৩ নভেম্বর দুপুরে ব্যবসায়ী কেরামত আলী দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের দড়িগাঁও বাজারে নিজ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে ৮৫ লাখ টাকা নিয়ে পিকআপ করে আবদুুল্লাহপুরস্থ সাউথ-ইস্ট ব্যাংকের উদ্দেশে রওনা দেন।

 পথে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জন ডাকাত কেরামত আলীর গতিরোধ করে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায় তারা। ডাকাতির ঘটনায় কেরামত আলী ১৪ নভেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। ডাকাতির ঘটনায় সরাসরি জড়িত চারজনকে গত শুক্রবার সাভারের কাউন্দিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যমতে পটুয়াখালীর সদর এলাকা থেকে একজনকে ১৯ লাখ টাকাসহ এবং যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকা থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত হাইয়েচ মাইক্রোবাস ও ১ লাখ টাকাসহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ডাকাতির কাজে তারা হ্যান্ডকাফ, ওয়ারলেস ও খেলনা পিস্তল ব্যবহার করত। এ অবস্থায় মোটা অঙ্কের টাকা বহনের ক্ষেত্রে থানা পুলিশের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডিবির এই কর্মকর্তা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর