বিশ্বের ৮৫ কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। এসব রোগীর মধ্যে ৪০ হাজার রোগীর কিডনি বিকল হয় প্রতি বছর। এসব বিকল রোগীর ৭৫ ভাগই মৃত্যুবরণ করে থাকে ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজনের সুযোগের অভাবে। এই রোগীদের বাঁচিয়ে রাখতে জেলা পর্যায়ে ডায়ালাইসিস সেন্টারের ব্যবস্থাসহ প্রতিটি মেডিকেল কলেজে কিডনি সংযোজনের ব্যবস্থা জরুরি। গতকাল কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের দুই দিনব্যাপী ১৮তম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন রয়াল লন্ডন হাসপাতাল, ইউকের অধ্যাপক মুহাম্মদ মাগদি ইয়াকুব। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. একেএম মোশারফ হোসেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কিডনি ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন রুবেল। দুই দিনব্যাপী এ বার্ষিক সম্মেলনের বৈজ্ঞানিক অধিবেশনগুলোতে দেশ বিদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ কিডনি রোগ ও প্রতিরোধ, হেমোডায়ালাইসিস, পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস, কিডনি সংযোজন প্রভৃতি সম্পর্কে আলোকপাত করবেন। এতে দেশের প্রায় ৩০০ চিকিৎসক অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাংলাদেশে কিডনি রোগ ও কিডনি বিকল রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুটো কিডনি অকেজো হয়ে গেলে রোগীকে বেঁচে থাকার জন্য ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজন করতে হয়। বাংলাদেশে এ দুটো চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে তবে এত ব্যয়বহুল যে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। আমরা বিএসএমএমইউতে মরণোত্তর কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি।
কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, কিডনি রোগের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, প্রথম দিকে এর কোনো উপসর্গ থাকে না। কিন্তু যখন উপসর্গ ধরা পড়ে ততক্ষণে কিডনির প্রায় ৭৫ ভাগই বিকল হয়ে পড়ে। তবে আশার কথা হলো, জনসাধারণকে সচেতন করা গেলে এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।
