সর্বজনীন পেনশন স্কিমে কন্ট্রিবিউটরি বিধানের পাশাপাশি খেতমজুরসহ গ্রামীণ শ্রমজীবী এবং অন্যান্য অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের জন্য জমাবিহীন পেনশন (নন-কন্ট্রিবিউটরি) প্রাপ্তির সুযোগ রেখে আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘খেতমজুর ও গ্রামীণ শ্রমজীবীদের জন্য জমাবিহীন পেনশন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ দাবি জানান। তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের পেনশন প্রদানের জন্য ‘ইউনিভার্সাল পেনশন স্কিম’ নামক একটি আইন সংসদে উত্থাপন করেছে। এ স্কিমে খেতমজুর ও শ্রমজীবী মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করতে তাদের জন্য জমাবিহীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। কারণ আয় নিয়মিত না হওয়ায় তারা পেনশন স্কিমে নিয়মিত চাঁদা পরিশোধ করতে পারবেন না।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর প্রায় ৬২ ভাগ ভূমিহীন। এরা পরের জমিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এ কাজ মৌসুমি। ফলে খেতমজুরসহ গ্রামীণ শ্রমজীবীরা ভ্যান চালানো, ইটভাটা, ধানের চাতালসহ গ্রামীণ জীবনযাত্রায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করেন। এ ভূমিহীনদের একটা বড় অংশ শহরে এসে অনানুষ্ঠানিক পেশায় যুক্ত হন। খেতমজুর বা কৃষিশ্রমিকের একটা বড় অংশ নারী। এখনো জনসংখ্যার ২২ ভাগ দারিদ্র্যসীমার নিচে। কভিডের পর এ সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতি ও নানা অর্থনৈতিক সংকট দারিদ্র্যের রূপ আরও প্রকট করে তুলবে। কাজ পাওয়াও দুষ্কর হয়ে উঠবে। মৌসুমি কাজ হওয়ায় খেতমজুরদের বার্ষিক আয়ের নিশ্চয়তা নেই। তাই পেনশন তহবিলে নিয়মিত চাঁদাদান তাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। ওই পেনশন এসব জনগোষ্ঠীর ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবে। ফলে সংবিধানের বিধান অনুসারে ইউনিভার্সাল পেনশন স্কিমের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা কার্যকর হবে না। এজন্য পেনশন স্কিমকে খেতমজুর ও গ্রামীণ শ্রমজীবীদের জন্য জমাবিহীন বা নন-কন্ট্রিবিউটরি করতে হবে।